এমন বিদায়ের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না: মেসি

পুরো ফুটবলবিশ্বকে চমকে দিয়ে গত বৃহস্পতিবার বার্সেলোনার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটেছে লিওনেল মেসির। তবে এরপর স্প্যানিশ ফুটবলে ঝড় বয়ে গেলেও আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড নিজে মুখ খোলেননি।

অবশেষে নীরবতা ভেঙে কৈশোরের ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় বলে দিলেন আধুনিক ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা। ক্লাব কিংবদন্তিকে বিদায় দিতে ক্যাম্প ন্যুর বাইরে হাজির হয়েছেন হাজারো সমর্থক। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টার দিকে মেসির গাড়ি ক্যাম্প ন্যুয়ে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে হাজারো সমর্থক দৌড়ে যান সেদিকে।

মেসি যখন ক্যাম্প ন্যুয়ের সংবাদ সম্মেলনে হাজির হচ্ছেন, তুমুল করতালিতে মুখর হয়ে উঠে পুরো কক্ষ। বক্তব্য দিয়ে মঞ্চে উঠার সময় সেই করতালির পর কান্নায় ভেঙে পড়েন মেসি। কাঁদতে কাঁদতে টিস্যু দিয়ে বারাবার চোখ মুছতে দেখা যায় তাকে। কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলে নিয়ে কথা বলা শুরু করেন তিনি।

নিজের বিদায়ী বক্তব্যের শুরুতেই মেসি বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি জানি না কি বলবো। গত কিছুদিন ধরে আমি ভেবছি কি বলবো, কিন্তু সত্যটা হচ্ছে, আমি কিছুই ভাবতে পারছিলাম না। এত বছর, প্রায় পুরো জীবনটাই এখানে থাকার পর এটা আমার জন্য কঠিন, আমি এটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। ‘

’২১ বছর পর আমি আমার ৩ কাতালান-আর্জেন্টাইন সন্তানসহ এখান থেকে চলে যাচ্ছি। এই শহরে থেকেছি আমরা, এটাই আমাদের ঘর। সবকিছুর জন্য আমি গর্বিত, আমার সতীর্থদের জন্য এবং যারা আমার পাশে ছিলেন তাদের জন্য। আমি এই ক্লাবের জন্য সেই শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত সামর্থ্যের সবটুকু দিয়েছি। আমি বিদায়ের কথা কখনো ভাবতেই পারিনি। আমি এখনও এই ক্লাব ছাড়া ও জীবন বদলে যাওয়ার বাস্তবতা বুঝতে পারছি না। তবে এটা মেনে নিতেই হবে এবং সামনে এগিয়ে যেতে হবে,’ যোগ করেন মেসি।

অপ্রত্যাশিত এক সপ্তাহ কাটিয়েছেন আর্জেন্টাইন এ তারকা। অল্প কিছু সময়ের ব্যবধানে তাকে ছাড়তে হয়েছে ক্যাম্প ন্যু। সবকিছু মিলিয়ে খুব খারাপ সময় যাচ্ছে মেসির। এরইমধ্যে সমর্থকদের কাছে তার বিদায়ের ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে তিনি সংবাদ সম্মেলনে আসেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে মেসির সঙ্গে বার্সার চুক্তি নবায়নের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। দুই পক্ষ আর্থিক বিষয় এবং চুক্তি নবায়নের ব্যাপারে একমত হয়েছিল। কিন্তু লা লিগার আরোপিত অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতায় তা সম্ভব হয়নি।

গত ৩০ জুন বার্সার সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছিল মেসির। তখনও শোনা গিয়েছিল, চুক্তি নবায়ন হচ্ছে। এমনকি বার্সাকে সাহায্য করতে বেতন অর্ধেক কমিয়েও নিতে চেয়েছিলেন সদ্য সাবেক বার্সা অধিনায়ক। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। শেষ পর্যন্ত ২১ বছরের বন্ধন ছিন্ন হলো।