টেকনাফে বন্যার পানিতে ডুবলো উপহারের ঘর

কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া।

কক্সবাজারের টেকনাফে বন্যার পানিতে ডুবলো উপহারের ঘর। গত তিনদিন ধরে কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে এসব ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। একারণে উক্ত ঘর গুলোতে আশ্রিয় ভূমি ও গৃহহীন মানুষ গুলো আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্রে।

সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার গুলোতে প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার দেয়ার অংশ হিসাবে কক্সবাজারে টেকনাফেও বরাদ্দ দেয়া হয়। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অর্থায়নে টেকনাফে ২২৯টি ঘর বরাদ্দ পায়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রথম পর্যায়ে ৫০টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার গুলোকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এই প্রকল্পের আওতায় টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার থেকে পূর্ব দিকে দেড় কিলোমিটার ভেতরে সীমান্ত সড়কের কাছাকাছি সরকারি উদ্যোগে নির্মিত ২৮টি ঘর। অথচ গত তিনদিন ধরে ভারি বৃষ্টিতে পানিতে ডুবে রয়েছে এসব ঘর।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হ্নীলা ইউনিয়নের আবুল কালাম, মো. সাবের, সৈয়দুল আমিন ও হোসেন বলিসহ লবণ চাষিদের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত সড়কের বেড়িবাঁধের স্লুইস গেট বন্ধ রেখেছে। ফলে দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে এলাকাটি পানিতে তলিয়ে গেছে।

হ্নীলার মৌলভীবাজারের উপহারের ঘরে পানিবন্দি সমিরা বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘দুই দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছি। নৌকায় করে খাবার এনে খেতে হচ্ছে। কেউ সহায়তা দিতে আসেনি। এখানে ২৮টি পরিবারের মধ্য আমরা চার পরিবার ছাড়া বাকিরা অন্যত্র চলে গেছেন। আমাদের কোনও স্বজন নেই, তাই পানিবন্দি থাকার পরও কোথাও যাওয়ার জায়গা পাচ্ছি না।

পরিবারের সদস্যদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়ে ঘর পাহারা দিচ্ছিলেন সৈয়দ আলম ওরফে লালু। তার অভিযোগ, ‘স্থানীয় একটি চক্র সীমান্তের বেড়িবাঁধের স্লইস গেইট বন্ধ রাখায় পানিবন্দি হয়েছি! এ ঘরটি আমার একমাত্র সম্বল, তাই পরিবারের নারী সদস্যদের অন্যত্র পাঠিয়ে এখানে অবস্থান করছি। তাছাড়া অনেকে অন্যত্র চলে গেছেন। পানি নেমে গেলে হয়তো আবার ফিরবেন। আজকে দুই দিন ধরে ঘরে চুলা জ্বালাতে পারিনি। এখানে সুপেয় পানি ও কোনও খাবারের ব্যবস্থা নেই। কষ্টের দিন কাটাচ্ছি আমরা।

স্থানীয় বাসিন্দা আমিন হোসেন বলেন, ‘কয়েকজন অসাধু লবণ চাষির জন্য তাদের পুরো এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পাঁচ শতাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি দিন কাটাচ্ছেন। সেখানে খাবার পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকট দেখা দিয়েছে।’

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, বেড়িবাঁধের স্লুইস গেটের অভাবে এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরও রয়েছে। তবে বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পানি কারণে কমছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সীমান্ত সড়কের বেড়িবাঁধের স্লুইস গেটের বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। যাতে পানি না জমে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে