‘ফড়িয়া বিনিয়োগকারী ও পুঁজি সংগ্রহকারী চাই না’

বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, আমরা ফড়িয়া ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও পুঁজি সংগ্রহকারী চাই না। দক্ষ ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও পুঁজি সংগ্রহকারী চাই। জ্ঞাননির্ভর বিনিয়োগের বিকল্প নেই।

শনিবার (৩০ মার্চ) নগরের কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, আশার বাণী শুনিয়ে পুঁজিবাজার পরিবর্তন করা কী সম্ভব? জেনে বুঝে বিনিয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনী ইশতেহার কমিটির সদস্য হিসেবে যখন কাজ করি তখন পুঁজি বাজারকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। পুঁজিবাজারে আমাদের সক্ষমতা ক্রমে বাড়ছে। বাংলাদেশ অর্থনীতিতে বিশ্বের বিস্ময়। আমাদের দরকার অর্থনৈতিক সুশাসন।

তিনি বলেন, স্ট্রাকচারাল প্রবলেম সমাধান করবো। আমরা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। তেমনি সরকারি সংস্থাগুলোকেও জবাবদিহি করতে হবে। আমরা টেকসই সমাধান চাই। সর্বস্ব নিয়ে, ধার করে পুঁজিবাজারে আসে। এটি মহৎ কাজ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপের ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে বিএসইসির আইনি সক্ষমতা বাড়ানো বিনিয়োগকারীদের দাবি।

তিনি বলেন, আমরা পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করতে চাই। উদ্দেশ্য সঠিক না হলে পুঁজিবাজার এগোবে না। জনগণের অর্থ নিয়ে ছিনিমিনি যারা খেলবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ‘দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম’ এর অংশ হিসেবে এ কনফারেন্স আয়োজন করে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএসইসির কমিশনার প্রফেসর মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, ড. স্বপন কুমার বালা, খন্দকার কামালুজ্জামান প্রমুখ।

ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের প্রধান হাতিয়ার জ্ঞান। জেনে বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে, জেনে শুনে নয়। বাজারের গভীরতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের বিকল্প প্রডাক্ট আনতে হবে। ২০৪১ সালে ধনী দেশে উন্নীত হতে হলে এটি একটি পয়েন্ট। দেশি বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার উদ্যোগ নিচ্ছি। ক্ষুদ্র ও মাঝারী বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

তিনি জানান, ২৭ এপ্রিল ময়মনসিংহে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের বিভাগীয় কর্মসূচি শেষ হবে। বিনিয়োগ শিক্ষা পেলে কৌশল নির্ধারণ করতে পারবেন বিনিয়োগকারী। ভারত, শ্রীলংকার মতো আমরাও বিনিয়োগ শিক্ষা পাঠ্যবইতে আনতে চাই।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ কীভাবে বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে কাজ করছি। কারসাজি বন্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব কিন্তু অবিবেচনা প্রসূত বিনিয়োগের দায় নিতে পারব না। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের প্রধান লক্ষ্য। বাজার স্থিতিশীল রাখতে কাজ করছি আমরা।

প্রফেসর মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে। বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমকে মূলধারার পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিনিয়োগ শিক্ষার কোনো বয়স নেই। পেশাজীবীদের বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের কৌশল ভিন্ন হবে।

বক্তারা বলেন, সচেতন ও বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত বিনিয়োগকারী তৈরি করতে চায় বিএসইসি। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখতে এ আয়োজন।

কনফারেন্সে বিভিন্ন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিপুল সংখ্যক পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী অংশ নেন।