কর্মহীন কুতুবদিয়ার কামার শ্রমিকরা, চরম অভাবে দিন কাটাচ্ছে

লিটন কুতুবী: অভাব যখন দরজায় এসে দাড়ায় ভালবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়, বিশ্ব ব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারনে থমকে গেছে মানুষের আয় ইনকামের চাকা। কর্মহীন হয়ে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ। শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ কর্মহীন হয়ে চরম আর্থিক অনটনে ভোগছেন। চলতি বছর ঈদুল আজহায় অধিকাংশ মানুষ পশুর কোরবানি দিতে পারছে না। যার ফলে দা ছুরির ব্যবহার কমে গেছে। তারই চিত্র চোখে পড়েছে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার কামার পাড়ায়।
কুতুবদিয়া উপকূলের কামার পাড়ায় শ্রমজীবি কর্মকারদের দিন যাচ্ছে চরম অভাবে। করোনা ভাইরাস মহামারি কারনে সারা দেশে লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষ অর্থের অভাবে চলতি বছর ঈদুল আজহায় কোরবানি পশু জবাইর সংখ্যা কমে যাওয়ায় কামার পাড়ার লোকদের তেমন ব্যস্ততা চোখে পড়ছে না। বিগত এক বছর আগে এ দিনে কামার পাড়ায় জমজমাট দা,ছুরি বিক্রি ও সান দেয়ার ধুম ছিল। কিন্তু চলতি বছর ঈদুল আজহায় পশু জবাই, পশুর মাংস প্রক্রিয়াকরণসহ বিবিধ কাজে ব্যবহার্য্যের জন্য কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ও ধুরুং দুইটি বাজারে ১৫ টি কামারের দোকানে ৪৫/৫০ জন কর্মকার জাতি পেশায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলার বৃহত্তর ধুরুং বাজারে রবিবার( ১১ জুলাই) সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কামার পাড়ার কর্মহীন কর্মকারদের বাস্তব দৃশ্য।
কামার পাড়ার কর্মকারগন পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অভাবে দিন কাটানোর কথা তুলে ধরেন ধুরুং বাজারের মিলন হার্ডওয়াকের মালিক মিলন নন্দী। তিনি জানান, গত বছর এ দিনে কর্মকারগণ কাজের ব্যস্ততার চাপে কথা বলার সময় ছিল না। কিন্তু এ বছর কাজের চাপ নেই। একই এলাকার রাজু কর্মকার, দিবাকর কর্মকার জানান, প্রতি বছর এদিনে দা,ছুরি তৈরী ও সান দেয়ার জন্য ৫/৬ জন অতিরিক্ত কারিগর নিয়োগ দেয়া লাগতো। এ বছর লকডাউনের কারণে কাজ না থাকায় অতিরিক্ত লোক নিয়োগ বন্ধ রেখেছেন। জনাধন কর্মকার জানান, লকডাউনে তাদের কামার পাড়ায় কাজ নেই। যার ফলে তারা অভাব অনটনে দিন কাটাছেন।
বড়ঘোপ বাজারের কামার দোকান মালিক সুমন কর্মকার বলেন, জাতি পেশা কর্মকার। এ পেশা দিন দিন বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে। সরকারিভাবে তাদেরকে পূর্নবাসনের জন্য কোন ধরনের অর্থিক অনুদান দেয়নি। তাদের এ শিল্প প্রতিষ্ঠান ধরে রাখার জন্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠানও ঋণ দেয় না।