টিকার এই অনুদান শুরু মাত্র: মিলার

বাংলাদেশে মডার্নার ২৫ লাখ টিকা দেওয়ার বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেছেন, ‘টিকার এই অনুদান শুরু মাত্র। আমরা আমাদের উদ্বৃত্ত সরবরাহগুলো দান করা অব্যাহত রাখবো’। শনিবার (৩ জুলাই) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, আমেরিকান জনগণের পক্ষ থেকে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা উপহার ২.৫ মিলিয়ন বা ২৫ লাখ ডোজ মডার্নার কোভিড-১৯ টিকা সাদরে গ্রহণ করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার।

এই টিকাগুলো কোভিড-১৯ টিকার ন্যায়সঙ্গত বিতরণের বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্টের মাধ্যমে দুটি বিমানযোগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুক্রবার (২ জুলাই) রাতে ও শনিবার সকালে দেশে এসে পৌঁছেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া রাষ্ট্রদূত মিলারের সঙ্গে মিলে ২ জুলাই রাতে বিমানযোগে বাংলাদেশে আসা যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান করা টিকার প্রথম সরবরাহকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বৈশ্বিক প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রেসিডেন্ট বাইডেন টিকার বৈশ্বিক চাহিদা পূরণে সহায়তার লক্ষ্যে ৮০ মিলিয়ন ডোজ টিকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের মানুষের জীবন রক্ষা, মহামারির অবসান ও বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার লক্ষ্যে জি৭ অংশীদাররা, ইইউ, কোভ্যাক্স ও অন্যদের সঙ্গে মিলে বহুপাক্ষিকভাবে কাজ করছেন।

যুক্তরাষ্ট্র টিকার বৈশ্বিক জোটকে (গাভি) পরিকল্পিত ৪ বিলিয়ন ডলার অনুদানের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ২ বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। যাতে করে গাভি বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ টিকা পৌঁছে দিতে কর্মরত কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্টকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে পারে।

আর এই অনুদান বিশ্বব্যাপী ন্যায়সঙ্গতভাবে টিকা বিতরণ ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে বৃহত্তম দাতা দেশে পরিণত করেছে।

কোভ্যাক্স (কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্লোবাল অ্যাক্সেস) হলো টিকা জোট গাভি, কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারেডনেস ইনোভেশনস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত কোভিড-১৯ টিকা বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেওয়ার একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ।

মিলার বলেন, ‘আমেরিকান জনগণের দেওয়া উপহার ২.৫ মিলিয়ন ডোজ টিকা বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা করার প্রতিশ্রুতির সর্বশেষ নিদর্শনমাত্র। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মহামারি মোকাবিলা প্রচেষ্টায় সহায়তাকারী বৃহত্তম দাতা দেশ’।

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘আমরা শুধুই জীবন রক্ষার উদ্দেশ্যে এই কাজ করছি; কারণ এটাই সঠিক কাজ’।

এ গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্র কোভ্যাক্সের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিতরণের জন্য গাভিকে ৫০০ মিলিয়ন ডোজ ফাইজার টিকা বরাদ্দ দেওয়া শুরু করবে। এটি হলো কোনো একটি একক দেশের পক্ষ থেকে এ যাবতকালে সর্ববৃহত পরিমাণে টিকা কেনা ও সেগুলো দান করার মাধ্যমে বিশ্বের মানুষকে কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষায় সহায়তা করার ক্ষেত্রে আমেরিকান জনগণের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির মাধ্যমে কোভ্যাক্সকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান তাদেরকে নিরাপদ ও কার্যকর কোভিড-১৯ টিকা কিনে বিশ্বের ৯২টি নিম্ন-মধ্যমআয়ের দেশের সর্বাধিক অবহেলিত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দিতে সহায়তা করবে।

এই সহায়তা মহামারি নিয়ন্ত্রণ, ভাইরাসের নতুন ধরন তৈরি হওয়া শ্লথ করতে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরায় চালু করতে সাহায্য করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্যরক্ষায় এবং কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের কার্যক্রম জোরদার করতে বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে চলেছে। এখন পর্যন্ত কোভিড-সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি, প্রতিরক্ষা বিভাগ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং সিডিসির মাধ্যমে বাংলাদেশকে ৮৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছে।