দেশে ভ্যাকসিন তৈরির কারখানা হবে গোপালগঞ্জে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশীয় টিকা উৎপাদন সময়সাপেক্ষ হলেও ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। সরকার এ বিষয়ে খুবই আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বেশ কয়েকটি সভাও হয়েছে। দেশীয় ভ্যাকসিন তৈরির কারখানা স্থাপন হবে গোপালগঞ্জে সরকারি ওষুধ কারখানার পাশে অথবা সেখানে। সরকার লকডাউনের ওপর নির্ভরশীল হতে চায় না। কিন্তু লকডাউন দিতে হয় বাধ্য হয়ে। যদি আপনার হাতে ভ্যাকসিন না থাকে তাহলে লকডাউনই করোনা সংক্রমণ রোধে একমাত্র কার্যকরী পন্থা। বিশ্বের সকলেই লকডাউন দিয়ে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।

গতকাল বিকালে মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা লকডাউন চাই না। লকডাউনের মাধ্যমে মানুষের ক্ষতি হয়। দেশের বিরাট ক্ষতি হয়ে যায়। কাজেই এটা আমাদের কাম্য নয়। কিন্তু মানুষের জীবন রক্ষার্থে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে লকডাউন আমাদের দিতে হচ্ছে। কারণ, আপনারা জানেন ভ্যাকসিন যে সংখ্যায় চাই, সে সংখ্যায় পাই না। আমরা ভারতের সঙ্গে তিন কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি করেছিলাম। পেয়েছি মাত্র ৭০ লাখ। আর তারা উপহার দিয়েছিলেন ৩০ লাখ। এখনো দুই কোটি পাওনা আছে। চায়নার সঙ্গে আমাদের দুই কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি আছে। সব মিলিয়ে ৬ কোটি ৮০ লাখ বুকিং দেয়া আছে। সবাই যদি তাদের কমিটমেন্ট রক্ষা করে তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যে ১১ কোটি ভ্যাকসিন হাতে আসতে পারে। এতে সাড়ে ৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে পারবো। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে জনসন অ্যান্ড জনসনের ৭ কোটি ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে দেশে ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যাবে।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, চীনের সিনোফার্ম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। সেখান থেকে খুব তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন আসবে। সংখ্যাটা এই মুহূর্তে বলা না গেলেও একটা ভালো সংখ্যা হবে বলে আশা করছি। সেই সঙ্গে রাশিয়া ও চায়নাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে আমাদের দেশে সরকারের সঙ্গে অথবা প্রাইভেট কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করার। তারা রাজি হলে এ ব্যাপারে ভ্যাকসিন তৈরির অনুমোদন দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ডব্লিউএইচও যে তথ্য দিয়েছে তাতে মডার্নার ভ্যাকসিন আগামী ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে চলে আসবে। মডার্নার ভ্যাকসিন খুবই ভালো ভ্যাকসিন। মাইনেস ২০ ডিগ্রিতে রাখতে হয়। সে ব্যবস্থাও ইতিমধ্যে করা হচ্ছে।
লকডাউন সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও বলেন, দেশে করোনার কারণে মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। সংক্রমণ হারও বেড়ে গেছে। তাই লকডাউন দিয়ে করোনা সংক্রামণ হার কমানো চেষ্টা চলেছে। আগামী সোমবার থেকে ৭ দিনের জন্য সারা দেশে কঠোর লকডাউন বা শার্টডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় মানুষজন প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এছাড়া করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির বাড়িতে আগের মতো লাল পতাকা উত্তোলন করা হবে। এতে সাধারণ মানুষজন সচেতন হবে কোনো ব্যক্তি করোনা সংক্রমিত হয়েছেন