অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী

পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে গেছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোফভেন। সোমবার তার বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের ওপর ভোট গ্রহণ করা হয়। বিরোধী আইন প্রণেতাদের আনীত প্রস্তাবের ওপর এই ভোটে তিনিই হলেন দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন। হেরে গেলেও এখনই চেয়ার ছাড়তে হচ্ছে না তাকে। পদত্যাগের জন্য সোশ্যাল ডেমোক্রেট এই নেতা এক সপ্তাহ সময় পাবেন। এ সময়ে তিনি স্পিকারকে নতুন সরকার গঠনের কাজ দিতে পারেন অথবা আগাম নির্বাচন ঘোষণা করতে পারেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন।

নবনির্মিত এপার্টমেন্টের ভাড়ানিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা শিথিলকরণের এক পরিকল্পনায় মধ্য-বামপন্থি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে সাবেক কমিউনিস্ট লেফট পার্টি।

এরপরই সুযোগ পেয়ে যায় জাতীয়তাবাদী সুইডেন ডেমোক্রেটরা। তারা এই সুযোগে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। দেশটির পার্লামেন্টে গ্রিন পার্টির সঙ্গে সংখ্যালঘু জোট করেছিল লোফভেনের পার্টি। এক্ষেত্রে তারা ক্ষমতায় যান পার্লামেন্টের আরো দুটি মধ্য-ডানপন্থি দলের সমর্থনের ওপর ভর করে। তারা হলো- সেন্টার পার্টি অ্যান্ড দ্য লিবারেলস এবং লেফট পার্টি। এর মধ্যে লেফট পার্টি সমর্থন প্রত্যাহার করায় বিপদে পড়ে যান প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোফভেন।

পার্লামেন্টে সুইডেন ডেমোক্রেট নেতা জিমি আকিসন বলেন, এই সরকার ক্ষতিকর এবং ঐতিহাসিকভাবে দুর্বল। তাদের আর কখনোই ক্ষমতায় আসা উচিত নয়। ৩৪৯ আসনের পার্লামেন্টে তার উত্থাপিত অনাস্থা ভোট পাস হতে কমপক্ষে ১৭৫টি ভোট প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তিনি পেয়েছেন ১৮১ ভোট।

সোমবার পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে স্টেফান লোফভেন বলেছেন, সুইডেন এখন এক জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে। লেফট পার্টি ডানপন্থি রক্ষণশীল দলগুলোর সঙ্গে একত্রিত হয়েছে অনাস্থা ভোটে। এটা একটা অস্থায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠতা। তারা একজোট হয়েছে শুধু সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে। কিন্তু বিকল্প একটি সরকারের ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্থক্য আছে। তাই তিনি অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন। এরপরই এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন পদত্যাগ করবেন নাকি আগাম নির্বাচন দেবেন।

পক্ষান্তরে এই সঙ্কট সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোফভেনকেই দায়ী করেছে লেফট পার্টি। এ দলটির নেতা নুশি দাদগোস্টার বলেছেন, যে কারণে সোশ্যাল ডেমোক্রেট সরকারকে ত্যাগ করা হয়েছে, তার জন্য লেফট পার্টি দায়ী নয়। সোশ্যাল ডেমোক্রেট সরকারই লেফট পার্টি ও সুইডিশ জনগণকে পরিত্যাগ করেছে।

এখন সেখানে পার্লামেন্টে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে যদি স্টেফান লোফভেন পদত্যাগ করেন তাহলে স্পিকার কাকে সরকার গঠনের জন্য ডাকবেন তা নিশ্চিত নয়। জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে মধ্য-বাম এবং মধ্য ডানপন্থি ব্লক বেশ ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আছে। তাই আগাম নির্বাচন সামনে নাও আসতে পারে।