বাংলাদেশে স্থাপিত কারখানায় নোকিয়া উৎপাদন শুরু ২৬ জুন

অবশেষে বাংলাদেশে স্থাপিত কারখানায় মোবাইল হ্যান্ডসেট সংযোজন শুরু করতে যাচ্ছে নোকিয়া।শুরুতে দুই মডেলের স্মার্টফোন দিয়ে যাত্রা। নোকিয়া ৪.২ এবং জি১০ এই দুই মডেলের স্মার্টফোন সংযোজন করে ঈদুল আজহা’র আগেই বাজারেও ছাড়তে চায় তারা।বিশ্বে মোবাইল ফোন বাজারের এক সময়ের শীর্ষ কোম্পানি, মহারথী নোকিয়ার কারখানা করা ঘোষণা ও প্রস্তুতি বেশ কয়েক বছর আগেরই।গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজলায় বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির ৫ নম্বর ব্লকে ৫ একর জায়গা বরাদ্ধ নিয়েছে সেই ২০১৭ সালের ২৪ মে। ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড এই বরাদ্দ নেয়, এটি যুক্তরাজ্যের ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার এবং বাংলাদেশের ইউনিয়ন গ্রুপের যৌথ উদ্যোগ।।সে সময় ভাইব্র্যান্ট ৪৫ মিলিয়ন ডলার বা বর্তমান হিসেবে ৩৮২ কোটি টাকা বিনিয়োগের উল্লেখ করেছিলো। যেখানে সাইবার সিটি, ডেটা সেন্টার, মোবাইল এবং স্মার্ট ডিভাইসসহ এটিএম কার্ড, স্মার্টকার্ডসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের কথা জানিয়েছিলো।ইউনিয়ন গ্রুপের মোবাইল অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন ডিভিশনের সিএমপিএল কোম্পানি দেশে দীর্ঘদিন ধরে নোকিয়ার আমদানি ও ডিস্ট্রিবিউশন করে আসছে।কারখানার অবকাঠামোগত স্থাপনা এগিয়ে রখালেও নানা জটিলতায় এতোদিন হ্যান্ডসেট উৎপাদনে যেতে পারেনি তারা। আমদানি করা যায়নি কারখানার যন্ত্রপাতিসহ হ্যান্ডসেটের যন্ত্রাংশও।শেষে চলতি বছরের মার্চে সব জটিলতা কাটিতে নতুন করে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর প্রায় তিন মাসের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করার জন্য তৈরি হয়ে যায় তারা।এইচএমডি গ্লোবাল বাংলাদেশের বিজনেস প্রধান ফারহান রশিদ টেকশহরডটকমকে বলছেন, দুটি মডেল দিয়ে ২৬ জুন আনুষ্ঠানিক উৎপাদনে যাচ্ছেন তারা। শুরুতে স্মার্টফোন তৈরি করা হবে।‘৬টি প্রডাকশন লাইনে প্রতিদিন ৮০০ ইউনিট হ্যান্ডসেট সংযোজনের সক্ষমতা রয়েছে। এখান হতে শুরুতে নোকিয়া ৪.২ এবং জি১০ এই দুই মডেলের ৩০ হাজার স্মার্টফোন বাজারে আসবে এবং চেষ্টা করা হচ্ছে ঈদের আগেই আনতে’ বলছিলেন তিনি।দেশের কারখানায় সংযোজনের ফলে গ্রাহকরা সাশ্রয়ী দামে মানসম্মত হ্যান্ডসেট পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।নোকিয়া মোবাইল প্রযুক্তির রূপান্তরের প্রতিযোগিতায় সম্রাজ্য হারিয়ে ২০১৪ সালে মাইক্রোসফটের কাছে বিক্রি হয়ে যায়। বছর দু’য়েকের মধ্যে ফিনল্যান্ডের কোম্পানি এইচএমডি গ্লোবাল নোকিয়া হতে ব্র্যান্ড লাইসেন্স ও মাইক্রোসফট হতে ব্যবসা কিনে নেয়। ২০১৬ সালের শেষ দিকে নোকিয়ার নামে ফিচার ফোন এবং এক বছর পরে স্মার্টফোনও আনতে শুরু করে তারা।আর সেই হতে হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন না হলেও মোবাইল ফোন বিশ্বে শক্ত অবস্থান তৈরিতে তাদের চেষ্টা লক্ষণীয়।

বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটেতে ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যারের ভবন (থ্রিডি নকশায়)। ভবনটি নির্মাণাধীন।
বাংলাদেশে সরকার মোবাইল ফোন উৎপাদনে এবং মোবাইল যন্ত্রাংশ আমদানিতে ব্যাপক শুল্ক ছাড়সহ নানা সুবিধা দেয়ার বিপরীতে হ্যান্ডসেট আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোয় স্থানীয়ভাবে দেশী-বিদেশী কোম্পানিগুলোর কারখানার করার হিড়িক পড়ে যায়।২০১৮ সালে দেশে কারখানা স্থাপন করে সেখানে সংযোজিত হ্যান্ডসেট বাজারে এনেছে ওয়ালটন, সিম্ফনি, স্যামসাং, আইটেল-ট্র্যানসান ও ফাইভস্টার।এই পাঁচ কোম্পানির পরে লাভা, ওকে মোবাইল, উইনস্টার, ভিভো, অপো, রিয়েলমি দেশে কারখানা করে। এছাড়া শাওমিসহ কয়েকটি ব্র্যান্ড দেশে কারখানার করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।