শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাঙালি জাতির গর্ব। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন বলেই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পেছনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান চিরস্মরণীয়। তাঁদের সুরক্ষা প্রয়োজন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে না থাকলে আমাদের নতুন প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানবে না। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
শুক্রবার (২৮ মে) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ড আয়োজিত করোনাকালীন (কোভিড-১৯) স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পালস অক্সিমিটার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘ইকো’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও দৈনিক পূর্বদেশের সৌজন্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ২০০ অক্সিমিটার বিতরণ করা হয়।
উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী খুনি জিয়া-মোস্তাকের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী, সিভিল সার্ভিস ও অন্যান্য স্থানে বেছে বেছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে। তারা সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতা চায়নি বরং মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে হত্যা করেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে সরকারের কঠিন হস্তক্ষেপের কারণে ব্যর্থ হয়েছে। এসব ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত জাদুঘর খুনি জিয়ার নামে কিছুতেই হতে পারে না। এটির নাম সংশোধন করে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি’ জাদুঘর নামকরণের জন্য সরকার ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রনালয়কে জানানো হয়েছে।
আজ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সঠিক পথে এগুচ্ছে। সরকারের বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে মানুষের গড় আয়ু ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণসহ বড়-ছোট প্রতিটি প্রকল্পের কাজ এখন দৃশ্যমান। সরকারের আন্তরিকতায় ইতিমধ্যে দেশে বিনামূল্যে করোনার ১ কোটি ভ্যকসিন ডাবল ডোজ করে দেওয়া হয়েছে অথচ পাকিস্তানসহ অনেক দেশ এখনো করোনার ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কে শামিল হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, তাদের স্যালুট। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে যতদিন দেশ থাকবে ততদিন স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকাও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি জাগরিত হয়ে থাকবে। করোনা পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে রয়েছেন বলেই তাঁরা সুরক্ষিত রয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আলাদাভাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা ও ভ্যাকসিন প্রদান সত্যিই প্রশংসনীয়।
আগামীতে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক রাসেল ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. সরওয়ার আলম চৌধুরী মনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, নগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা ও চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া।
বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, চট্টগ্রাম নগর কমিটির আহ্বায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু ও সদস্যসচিব কাজী মুহাম্মদ রাজীশ ইমরান প্রমুখ।










