চুয়েটে “মহামারিতে কর্মক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তা” বিষয়ক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ (সিইএসইআর)-এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে “মহামারি পরিস্থিতিতে কর্মক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তা” (Webinar on Occupational Health Hazard & Safety of Waste Workers in Pandemic Situation) বিষয়ক এক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ০১ মে (শনিবার), ২০২১ খ্রি. সকাল ১১.০০ ঘটিকায় উক্ত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম মহোদয়। গবেষণা সেন্টারের চেয়ারম্যান ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোছাঃ ফারজানা রহমান জুথীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বুয়েটের প্রাক্তন অধ্যাপক ও পুরকৌশল বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মুজিবুর রহমান। উক্ত ওয়েবিনারের প্রধান বক্তা ছিলেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও আইটিএন-বুয়েটের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ। ওয়েবিনার পরিচালনা করেন সিইএসইআর’র গবেষণা সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. আরিফ হোসেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, “আজ ঐতিহাসিক শ্রমিক দিবস৷ মে দিবস উপলক্ষ্যে সিইএসইআর কর্তৃক আয়োজিত বর্জ্য শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তা বিষয়ক ওয়েবিনারটি প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী একটি প্র‍য়াস। বিশ্বব্যাপী চলমান কোভিড-১৯ মহামারিতে বাংলাদেশ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। তা স্বত্তেও দেশের উন্নয়নে শ্রমিকদের কর্মকাণ্ড থেমে নেই। শ্রমিক-কর্মীদের নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করতে বিশেষত কোভিড-১৯ মহামারিতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে তাঁরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিজ-নিজ স্বাস্থ্য সচেতনতার পাশাপাশি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলেই টেকসই উন্নয়ন ও উৎপাদনশীল পরিবেশ পুরোপুরি বজায় থাকবে।” চুয়েট ভিসি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মীদের নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করতে নানামুখী কর্মসূচি পালন করছে। দেশের সকল পর্যায়ের শ্রমিকদের ‘সোশ্যাল সেইফটি নেট’-এর আওতায় আনার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। যা এই মহামারি পরিস্থিতিতে অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. মুজিবুর রহমান বলেন, “দেশে বিশাল সংখ্যক পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছে। কিন্তু তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও জীবনমানের উন্নয়নে আমরা উদাসীন। অথচ এই মহামারি পরিস্থিতিতে এরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের নীতিনির্ধারণী মহলে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”

ওয়েবিনারের স্পীকার অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারিতে পরিচ্ছন্নতা ও স্যানিটেশন কর্মীরাই সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। এরা আমাদের চারপাশের আবর্জনা-বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণ করার পাশাপাশি স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। এসব কাজ করতে গিয়ে তাদের কেমিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল টক্সিসিটির ঝুঁকিটা অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই প্রকট। কিন্তু আমাদের দেশে তাদের জন্য লিগ্যাল প্রোটেকশন যেমন দুর্বল, তেমনি অপর্যাপ্ত আর্থিক সুবিধা ও সামাজিক বৈষম্য বেড়েই চলেছে। এসব জায়গায় দৃশ্যমান উন্নয়ন না হলে শ্রমিকদের ভাগ্যবদল সম্ভবপর হবে না।”