অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কয়েকটি দেশে স্থগিত

রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কায় কয়েকটি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ডের করোনা ভাইরাসের টিকার প্রয়োগ সাময়িক বন্ধ রেখেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউরোপীয় মেডিসিন সংস্থা ও যুক্তরাজ্য বলছে, টিকার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের

ইউরোপের প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ইতিমধ্যেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধার মতো লক্ষণের খবর প্রকাশ পেয়েছে। ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় রক্ত জমাট বাঁধার কোনো লক্ষণ তারা পায়নি। অ্যাস্ট্রাজেনেকাও বলছে, ব্যাপকভিত্তিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে এই টিকার নিরাপত্তা সম্পর্কে সমীক্ষা করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ইউরোপীয় এবং এশীয় কিছু দেশে যে আতঙ্কে টিকা দেওয়া স্থগিত করেছে তার ভিত্তি নেই।থাইল্যান্ড যা বলছে

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর টিকা নেওয়ার মাধ্যমে গতকাল শুক্রবার অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই টিকাদান কার্যক্রম স্থগিত করেছে দেশটি। মূলত ডেনমার্ক ও নরওয়েসহ কয়েকটি দেশে রক্ত জমাট বাঁধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এই টিকা দেওয়া স্থগিত করা হয় এমন খবর আসার পরেই থাইল্যান্ড এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কমিটির উপদেষ্টা পিয়াসাকাল সাকলসাতায়াদর্ন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যদিও অ্যাস্ট্রাজেনেকার মান ভালো, তবু কিছু দেশ দেরি করে প্রয়োগ করার কথা বলেছে। আমরাও দেরি করেই করব। তবে দেশটির জন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ইউরোপের সঙ্গে থাইল্যান্ডে আসা টিকার ব্যাচ আলাদা এবং আর রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা এশিয়ানদের মধ্যে সাধারণভাবে দেখা যায়নি।অন্যদেশগুলো যা বলছে

যুক্তরাজ্যে ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, টিকায় সমস্যা হচ্ছে এমন কোনো প্রমাণ এখনো নেই এবং জনগণকে টিকা দেওয়া অব্যাহত রাখা উচিত। যুক্তরাজ্য জুড়ে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি ডোজ টিকা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়াতেও ৩ লাখ ডোজ টিকা গেছে এবং দেশটি বলছে, তারা টিকাদান অব্যাহত রাখবে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ মুহূর্তে চিকিত্সকদের পরিষ্কার বার্তা হচ্ছে—এটি নিরাপদ টিকা এবং আমরা টিকাদান চালিয়ে যেতে চাই। ফিলিপাইনও বলছে, টিকাদান স্থগিত করার কোনো কারণ নেই। দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, টিকা নেওয়ার কয়েক দিন পর আট জনের মৃত্যুর সঙ্গে টিকার কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে ডেনমার্ক, নরওয়ে ও আইসল্যান্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকা দেওয়া আপাতত স্থগিত করেছে। ইতালি ও অস্ট্রিয়া অবশ্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার নির্দিষ্ট কিছু ব্যাচের টিকার ব্যবহার পূর্বসতর্কতা হিসেবে বন্ধ করেছে। ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি জানিয়েছে, ডেনমার্কের সিদ্ধান্ত পূর্বসতর্কতা হিসেবে নেওয়া এবং রক্ত জমাট বাঁধার যেসব খবর এসেছে সেগুলোর বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত হচ্ছে।