ডাকসু নির্বাচন: উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ(ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ২৮ বছরের অপেক্ষা শেষে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর বহুল কাঙ্ক্ষিত এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে ভোট সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে অনেক প্রার্থীই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

আজ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ডাকসু ও হল সংসদের এ নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন শিক্ষার্থীরা।

সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজনের স্বার্থে রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইডি কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হয়।

অন্যান্য দিনের চেয়ে রাতের ক্যাম্পাসে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম থাকলেও শিক্ষার্থীদের রোববার গভীর রাত পর্যন্ত টিএসসি, ভিসি চত্বর ও বিভিন্ন আবাসিক হলের সামনে জমিয়ে আড্ডা দিতে দেখা গেছে।

এদিকে, ক্যাম্পাসের ডাস চত্বরে রোববার রাতে শতাধিক লাঠিসোটা, ব্যাট জব্দ করেছে প্রক্টরিয়াল টিম। শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা স্বত্বেও রোববার রাতেই সব কেন্দ্রে ব্যালট ও অস্বচ্ছ ব্যালটবক্স প্রেরণ করেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা।

প্রার্থীরা বলছেন, নির্বাচন কতটুকু নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে- তা নিয়ে শঙ্কা আছে। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তবে তারা হলরুম গেস্টরুম প্রথা তুলে দেবেন। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সন্ত্রাসমুক্ত গড়তে বদ্ধ পরিকর বলেও জানিয়েছেন প্রার্থীরা।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি ও ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ভোট নিয়ে কোনও শঙ্কা নেই। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীর পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। আমাদের প্যানেল সবার সেরা প্যানেল। জয়ের ব্যাপারে আমরা সম্পূর্ণ আশাবাদী।

ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক ও ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী আরটিভি অনলাইনকে বলেন, নির্বাচনের জন্য আমরা এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আশা করছি, পেশি শক্তির বিপক্ষে প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যের প্রার্থীদেরই শিক্ষার্থীরা বিজয়ী করবে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর প্রশাসনের ব্যাপক কড়াকড়ি প্রমাণ করে প্রশাসন স্বৈরতান্ত্রিকভাবে একটি পক্ষকে বিজয়ী করার চেষ্টা করছে। ভোটের অনিয়মকে ঢাকতেই মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করেছে তারা। এতকিছুর পরও আমরা নির্বাচনের মাঠে আছি, শুধুমাত্র শিক্ষার্থীরা নিজের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে বলে। আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাঠে থাকতে চাই।

ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, শুরু থেকেই প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। তাই ভোট সুষ্ঠু হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আমরা আশা করছি, প্রশাসন নিরপেক্ষতার পরিচয় দিবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ৪২ হাজার ৯২৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৬ হাজার ৭৭২ এবং ছাত্রী ১৬ হাজার ১৪৫।

ডাকসুর ২৫টি পদ ও হল সংসদের ১৩টিসহ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৫ পদের বিপরীতে ২২৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ২১ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৪ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৩ জন। এছাড়া ১৮ হল সংসদে লড়ছেন ৫০৯ জন।

ভোটার ৩৮টি ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার সুযোগ পাবেন।