ধর্মীয় চর্চা মানুষের মনকে পরিশুদ্ধ করে

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত চসিক মেয়র পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ধর্মীয় চর্চা মানুষের মনকে পরিশুদ্ধ করে, আলোকিত মানুষ হতে সাহায্য করে, কুসংস্কার হতে দূরে রাখে।
ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি দূরীভূত হয়, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ থাকে না। তিনি আরো বলেন, অসাম্প্রদায়িক চট্টগ্রামে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে যার যার ধর্মীয় উৎসব সবার উৎসব হিসেবে অন্তরে ধারণ করে পালন করে আসছে। ধর্মের নামে জঙ্গিবাদী কর্মকান্ড ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম, বিশ্ব মানবতার প্রতীক। দেশ সমৃদ্ধিশালী করার লক্ষ্যে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। বুধবার ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) চট্টগ্রাম আয়োজিত নন্দনকানন রাধামাধব মন্দিরে অন্নকূট উৎসব ও ইসকন প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল অভয়চরণাবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের তিরোভাব তিথিতে উদ্বোধকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অন্নকূট মহোৎসবে মহান আর্শিবাদক ছিলেন ইসকন বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি শ্রীল ভক্তিপ্রিয়ম গদাধর গোস্বামী মহারাজ, ইসকন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি শ্রীল ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ, পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম ইস্কনের বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। নন্দকানন ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ পন্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এড. রানা দাশগুপ্ত। আরো উপস্থিত ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এড. নিতাই প্রসাদ ঘোষ, নন্দনকানন ইস্কন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক তারণ নিত্যানন্দ দাস, নন্দনকানন মন্দিরের যুগ্ম সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নির্বাহী সদস্য সুমন চৌধুরী, নন্দনকানন ইসকনের অপূর্ব মনোহর দাস ব্রহ্মচারী, শেষরূপ দাস ব্রহ্মচারী, জগনানন্দ দাস ব্রহ্মচারী, রূপানুগ অনুপম দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ। উৎসবে বক্তারা বলেন, শ্রীল প্রভুপাদ ৭০ বছর বয়সে ১৯৬৫ সালে প্রথম আমেরিকা পদাপর্ণ করে বৈদিক সংস্কৃতি প্রাচাত্য দেশে প্রচার করেন। শ্রীল প্রভুপাদ আমেরিকায় ১৯৬৬ সালে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) প্রতিষ্ঠা করেন। বারো বছরে সারা পৃথিবী ১৪ বার পরিভ্রমণ করে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে ইস্কন মন্দির ও প্রচারকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে সারাবিশ্বে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মহিমা প্রচারের নিমিত্তে ১০৮টি বড় মন্দির সহ বৈদিক গুরুকূল, ফার্ম কমিউনিটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালে শ্রীল প্রভুপাদ এই পবিত্র দিনে নিত্যধাম গমন করেন। প্রভুপাদের তিরোভাব তিথি ও পরমেশ্বর ভগবান গিরি গোবর্ধন পূজা, অন্নকূট মহোৎসব সারাবিশ্বে সমাদৃত। শ্রীল প্রভুপাদ সারাবিশ্বে দিকভ্রান্ত যুব গোষ্ঠী ও সর্বস্তরের মানুষদের বৈদিক সংস্কৃতির আলোকে উদ্ভাসিত করে সঠিক পথে পরিচালিত করার প্রয়াস করেছেন। তাই তিনি বিশ্বে বরেণ্য ব্যক্তিত্বে পরিচিত হয়েছেন। এমন নিরমৎসর ব্যক্তি ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বনন্দিত আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন্) কে নিয়ে কিছু সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী উদেশ্যমূলক বিভিন্ন মিথ্যাচারের জন্য ইসকন সন্ন্যাসীবর্গ ও বক্তাগণ তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে প্রায় দশ সহস্রাধিক ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়।