৩ ইয়াবা গডফাদারের হাতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ জিম্মি

কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া(কক্সবাজার) প্রতিনিধি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত ৩ শীর্ষ ইয়াবা কারবারীর বেপরোয়া চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী লুটপাট, আধিপাত্য বিস্তারসহ নানা নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ জিম্মি দষায় জীবন যাপন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সদ্য জেল ফেরত ইয়াবা, চাঁদাবাজী, অপহরণ, টেন্ডারবাজী, সুবেদার ফজলুল হককে গুলি করে হত্যার চেষ্টাসহ ডজনখানিক মামলার আসামী সীমান্তের ইয়াবা বাজার ও অপরাধজগত নিয়ন্ত্রক বালুখালী গ্রামের মেম্বার নুরুল আবছার চৌধুরী, মেম্বার বকতার প্রকাশ ইয়াবা বকতার ও তার ছোট ভাই ইয়াবা জাহাঙ্গীরসহ শীর্ষরা।
সম্প্রতি মেজার অব সিনহা হত্যাকান্ড ও ওসি প্রদীপসহ জড়িতরা আটক হওয়ার ঘটনার পর থেকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ব্যস্ততা ও নিরব ভুমিকার ফলে উল্লেখিত গডফাদাররা তাদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাড়িহাড়ি ইয়াবা পাচার করে কালো টাকার পাহাড় গড়ে তোলার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে ভুল তথ্য সরবরাহ দিয়ে এলাকার নিরহ লোকজনের বাড়ীতে ইয়াবা ডুকিয়ে দিয়ে মিথ্যা সাজানো মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করা তাদের পেশা ও নেশায় পরিণত হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ছৈয়দ নুর জানান, কিছু দিন আগে তাকে মিথ্যা সাজানো মাদক মামলায় ফাঁসানোর জন্য উল্লেখিত ইয়াবা গডফাদাররা তার বাড়ীতে ইয়াবা ডুকিয়ে দেয় বলে তিনি জানান। পরে অভিযান পরিচালনাকারী বিজিবি সদস্যরা ঘটনার মূল রহস্য উৎঘাটন করে উক্ত ইয়াবার সাথে জড়িত পাচার কারীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে।
সম্প্রতি পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী পানবাজারে টমটম থেকে চাঁদাবাজির ঘটনা নিয়ে ইয়াবা কারবারিরা ঘন্টাব্যাপী তান্ডব চালিয়েছে। এসময় বালুখালী পানবাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা নিয়ে মানুষ দিকবেদিক ছুটাছুটি করতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো সেখানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে টমটম চালক সমিতি নেতৃবৃন্দদের অভিযোগ।ঘটনাটি ঘটেছ শনিবার দুপুর ২টার দিকে। এসময় টমটম অফিসে কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাদের মাসিক হিসাব নিকাশ করছিল বলে জানা গেছে।
বালুখালী টমটম চালক সমবায় সমিতির সভাপতি রিদুয়ান ছিদ্দিকী অভিযোগ করে জানান, বিপুল পরিমান ইয়াবা নিয়ে র‌্যাব ১৫ এর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া সদ্য জেল ফেরত মেম্বার নুরুল আবছার চৌধুরী,ইয়াবা বকতার, জাহাঙ্গীর, আলমগীর নিশা ও আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে প্রায় ২০/২৫ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীসহ শতাধিক লোকজন ধারালো অস্ত্রসস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে অর্তকিত ভাবে টমটম অফিসে হামলা চালিয়ে অফিস দখলে নেওয়ার অপচেষ্টা চালায়। এসময় স্থানীয় গ্রামবাসী রোহিঙ্গাদের আগ্রাসন মনে করে প্রতিরোধ গড়ে তুলে হামলা চালালে প্রতিপক্ষরা পালিয়ে যায়। রিদুয়ান ছিদ্দিকী আরো জানান, এলাকার কুখ্যাত ইয়াবা কারবারি যাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে তারাই নিরীহ গরীব, টমটম চালকদের নিকট থেকে দৈনিক ৪০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। চাঁদা না দিলে এসব টমটম চালকদের শারীরিক নির্যাতন করা হতো। সম্প্রতি শতাধিক টমটম চালক স্বাক্ষরিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করলে প্রতিপক্ষরা টমটম চালকদের উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
এদিকে টমটম চালকদের পক্ষালম্বণকারী রিদুয়ান ছিদ্দিকী ও আকবর আহমদের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী কমিটি গড়ে উঠে টমটম চালক সমিতির ব্যানারে। এ ঘটনা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধ চলে আসছিল। অভিযোগকারীরা জানান, সদ্য জামিনে মুক্ত এলাকার ইউপি সদস্য নুরুল আবছার চৌধুরী তার আধিপাত্য বিস্তার ও ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য টমটম অফিস দখল করতে এসে ঘটনার সূত্রপাত হয়। শুধু তাই নয়, উক্ত তিন ইয়াবা গডফাদার ক্ষিপ্ত হয়ে টমটম চালকদের পক্ষালম্বণকারী রিদুয়ান ছিদ্দিকী, ছৈয়দ নুর ও নুরুল আলম সাওদাগরকে পানবাজার এলাকার আকবর হাজীর মেয়ে ছালেহা আকতার (২২) কে লাখ টাকার কন্ট্রাকে বাদী বানিয়ে একটি মিথ্যা সাজানো মামলার প্রস্তুতির ভিডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনায় উল্লেখিত গডফাদাররা দিশাহারা হয়ে পড়েছে বলেও জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেম্বার নুরুল আবছার চৌধুরী বলেন,গত নির্বাচনে পরাজিতরা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে।