হত্যার পর প্রাইভেটকারে পা রাখার জায়গায় রেখে লাশ বহন

কিশোরগঞ্জে মায়ের সঙ্গে পরকীয়া করে বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ ছেলে দুঃসম্পর্কের চাচাকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করিয়েছেন জানিয়েছে পুলিশ। হত্যার পর মরদেহ প্রাইভেট কারে করে এনে চট্টগ্রামের পটিয়া সড়কের পাশে ফেলে দেয়।
এ ঘটনার পর তদন্তে নেমে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ থেকে হত্যার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতার দুইজন হলো- আশিক মিয়া (২১) ও মো. সুমন মিয়া (২৪)। নরসিংদী থেকে আশিক ও কিশোরগঞ্জ থেকে সুমনকে গ্রেফতার করে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা টিম। গ্রেফতারের পর রোববার (২৫ অক্টোবর) দুইজনকে তিনদিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে।

গত ১৭ অক্টোবর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিখাইন এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পটিয়া থানা পুলিশ। উদ্ধার করা মরদেহটির গলায় গামছা পেঁচানো ও পায়ের রগ কাটা ছিল। উদ্ধারের পর আঙুলের ছাপ মিলিয়ে ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। নবী হোসেন নামে ওই যুবকের বাড়ি ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের পুরানচর এলাকায়।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, নবী হোসেন খুনের ঘটনার পর তদন্তে নেমে প্রথমে তার পরিচয় শনাক্ত করি। পরে তদন্তে নেমে আশিক মিয়া ও মো. সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানা গেছে।

পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, নবী হোসেনের সঙ্গে এক নারীর পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল। পরে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। কিন্তু এটি মেনে নিতে পারেননি ওই নারীর সন্তান সাব্বির। সাব্বির নবী হোসেনকে খুনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তুষার নামে একজনের সাথে ৬০ হাজার টাকায় চুক্তি করে সাব্বির। গত ১৫ অক্টোবর মাইক্রোবাসে করে ভৈরব থেকে নবী হোসেনকে মাইক্রোবাসে করে অপহরণের চেষ্টা করে তারা। প্রথম দিন ব্যর্থ হওয়ায় তারা পরদিন মাইক্রোবাসের পরিবর্তে প্রাইভেটকার নিয়ে নবী হোসেনকে অপহরণ করে।

তিনি বলেন, অপহরণের পর নবী হোসেনকে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে আসার পথে কুমিল্লা এলাকায় মুখে গামছা বেঁধে ও গলা টিপে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য নবী হোসেনের পায়ের রগ কেটে দেয় তারা। হত্যার পর নবী হোসেনের মরদেহটি প্রাইভেটকারে পা রাখার জায়গায় রেখে তারা কক্সাবাজারের দিকে রওনা করে। পথে পটিয়ায় মরদেহটি সড়কের পাশে ফেলে দেয়।

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান।