’ব্রুকলি’ স্তন ক্যান্সার, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়

ক্যান্সার মানেই খরচ, সঙ্গে প্রাণনাশের ভয়। এই দুই আতঙ্কই ক্যান্সার সম্পর্কে শঙ্কা তৈরি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, প্রতি বছর প্রায় ১৩ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ নতুন করে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং ৪ লক্ষ ৫৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই রোগে।

খাবারের পাতে নজর, নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, চিনি-নুন-ময়দার হার কমিয়ে ফেলা এ সব অভ্যাসেই রোগ থেকে দূরে থাকার নিদান দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

ক্যান্সার নিয়ে সারা বিশ্বে নানা গবেষণায় উঠে এসেছে ম্যালিগন্যান্সি ঠেকানোর উপায়ের সুলুকসন্ধান। সম্প্রতি কয়েকটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, ক্যান্সারের টিউমারের বৃদ্ধি (ম্যালিগন্যান্ট টিউমার) ঠেকাতে ব্রুকলি হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত কার্যকরী। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই সব্জির ভূমিকা অনেক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-এর সমীক্ষা অনুসারে, ২০১৭-১৮ তে পৃথিবীতে প্রায় ১৩ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৪ লক্ষ ৫৮ হাজার মানুষ। ভারতেও এই রোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের বাড়বৃদ্ধি রুখতে গবেষণা চালিয়েছেন দীর্ঘ দশ বছর।

প্রধান গবেষক ইনগ্রিড হ্যারের মতে, ব্রকোলির বিটা-ক্যারোটিন, ফ্ল্যাভোনয়েড, লিউটেন, ক্যারটিনয়েড এবং জিক্সানথিন-এর মতো একাধিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান একাধিক গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তবে ক্যান্সারের বেলায় এই সব্জি আরও একটু বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ব্রুকলিতে থাকা সালফোরাফেন নামক ভেষজ যৌগ প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের বৃদ্ধি ঠেকাতে সক্ষম। এ ছাড়াও এতে থাকা গ্লুকোরাফানিন ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের টিস্যু মেরামত করতে পারে।

গবেষকদের সঙ্গে সহমত এই শহরের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সুকুমার সরকারও। তাঁর মতে, ‘রোগ হলে চিকিৎসা করাতেই হবে। তবে রোগ আসার আগেই প্রতিরোধে মন দিন। শরীরকে সুস্থ রাখতে সবুজ শাকসব্জিতে সকলকেই আস্থা রাখতে বলা হয়। এর মধ্যে ব্রুকলির এমন ক্ষমতা মাথায় রেখে তাকেও খাবারের তালিকায় রাখতেই পারেন। ক্যান্সারের বিভিন্ন ওষুধেও সালফোরাফেনের ব্যবহার আছে, যা ব্রুকলির থেকে সহজেই মেলে।’

শুধু ক্যান্সারই নয়, ব্রুকলি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমায় বলে দাবি হ্যারের। ব্রকোলির পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের অন্যতম প্রধান জোগানদার। এগুলি স্নায়ুতন্ত্র ও হাড়কে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।