মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর পরামর্শ

ক্যাশ আউট খরচ কমিয়ে এক অংকে নামিয়ে আনতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারীদের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। লেনদেনের উচ্চ চার্জ গ্রামাঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি ক্ষুদ্র এবং ছোট উদ্যোক্তাদের সেবা থেকে অনেক দূরে রেখেছে।

তারা সরকারের চলমান ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রচারণা বাস্তবায়নের জন্য মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস চার্জের একটি সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্বেচ্ছায় ক্যাশ আউট চার্জ কমাবে না। ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের বিকল্প নাই।

তিনি আরও বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারীরা নিজেদের ইচ্ছেমত ব্যবসা করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো কোনো বিধি-নিষেধ আরোপ করেনি।

অপরদিকে, ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) পরিচালক আশীষ চক্রবর্তী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস প্রদানকারী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে বাংলাদেশে ক্যাশ আউট চার্জ অনেক বেশি। দেশের আর্থিক অর্ন্তভূক্তি ও ডিজিটাইলেশন প্রক্রিয়া ছড়িয়ে দিতে ক্যাশ আউট চার্জ এক অংকে নামিয়ে আনতে হবে।

বর্তমানে প্রতি এক হাজার টাকার ক্যাশ আউট চার্জ ১৮ দশমিক ৫০ টাকা। যদিও এজেন্টরা গ্রাহকের কাছ থেকে চার্জ হিসেবে ২০ টাকা নেন।

অন্য একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ২১০০ টাকার কম ক্যাশ আউটে গ্রাহকের খরচ আগের মতই অ্যাপে ১৭.৫০ টাকা এবং ইউএসএসডিতে ১৮.৫০ টাকা থাকছে। আর ২১০০ টাকার বেশি হলে ভ্যাটসহ ইউএসএসডি দিয়ে ক্যাশ আউটে গ্রাহককে দিতে হচ্ছে ১৪.৯৪ টাকা আর অ্যাপে ১১.৪৯ টাকা।

ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আশীষ চক্রবর্তী বলেন, এটি গ্রাহককে সহায়তা করবে। কিন্তু কতদিন এটি বহাল রাখতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, চার্জ যে অপারেটর কমিয়েছেন তাদের মত অন্যদেরও ক্যাশ আউট চার্জ কমানো উচিত। এতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক এক নির্দেশনায় মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস)-এ ভ্যাটসহ কী পরিমাণ টাকা কাটা হচ্ছে তা নির্দিষ্ট করে গ্রাহকদের জানাতে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি নির্দেশনা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সার্ভিস চার্জ/মাশুল হার সংক্রান্ত বিভ্রান্তি পরিহারকল্পে বিভিন্ন গণযোগাযোগ (সংবাদপত্র, পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশন, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি) এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন ইত্যাদি) প্রচার প্রচারণাসহ সব ক্ষেত্রে ভ্যাটসহ সার্ভিস চার্জ/মাশুল হার উল্লেখ করতে হবে।

ব্যাংকিং খাতের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন উদ্যোক্তা ক্যাশ আউট চার্জ কমাতে চায় না। বরং তারা গ্রাহকদের সেবা গ্রহণে আগ্রহী করতে বিভিন্ন ধরণের অফার দিচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশ আউট চার্জ কোন প্রতিষ্ঠান কী পরিমান নিচ্ছে তা জানাতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপনসহ সব ক্ষেত্রে প্রচার করতে বলা হয়েছে। ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর জন্য সম্মিলিতভাবে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।