নিউজিল্যান্ড সফরে হার দিয়ে শুরু মাশরাফিদের

এমনিতেই সাকিব আল হাসানকে ছাড়া খেলতে হচ্ছে। তার ওপর নিউজিল্যান্ডের পেসাররা যে উইকেটে আগুন ঝরালেন, সেখানে একটা উইকেটও পেলেন না বাংলাদেশের পেসাররা। হার দিয়ে শুরু হলো সিরিজ। আজ নেপিয়ারে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ৮ উইকেটে জিতে নিয়েছে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের দেওয়া ২৩৩ রানের টার্গেটে ৩৩ বল হাতে রেখেই পৌঁছে যায় কিউইরা। অপরাজিত সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ওপেনার মার্টিন গাপটিল। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ১৬ ফেব্রুয়ারি।

রান তাড়ায় নেমে সাবধানী শুরু করে নিউজিল্যান্ড। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন জুটি ছাড়িয়ে যায় শতরান। ৭২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন নিকোলাস। শেষ পর্যন্ত এই তারকাকে ৫৩ রানে থামিয়ে ১০৩ রানের বিশাল ওপেনিং জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নিকোলাসের বিদায়ের পর ৫৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন মার্টিন গাপটিল। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন (১১) জ্বলে ওঠার আগেই তাকে থামিয়ে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

সর্বশেষ ৬ ম্যাচে একটিও হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়া মার্টিন গাপটিল আজ দুর্দান্ত সেঞ্চুরি তুলে নেন। ক্যারিয়ারের ১৫তম সেঞ্চুরি তুলে নিতে এই হার্ডহিটিং ওপেনার খেলেছেন ১০৩ বল; হাঁকিয়েছেন ৬টি চার এবং ৩টি ছক্কা। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৮ চার ৪ ছক্কায় ১১৭* রানে। তার সঙ্গী অভিজ্ঞ রস টেইলর খেলেন ৪৯ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৫* রানের অপরাজিত ইনিংস। ৯৬ রানের অবিচ্ছিন্ন এই জুটিতেই ৩৩ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড।

এর আগে নেপিয়ারে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮.৫ ওভারে ২৩২ রানে অল-আউট হয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। শুরুতেই দুই পেসার ম্যাট হেনরি আর ট্রেন্ট বোল্টের তোপের মুখে পড়ে টাইগাররা। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (৫) এবং লিটন দাস (১) যথাক্রমে বোল্ট আর হেনরির শিকার হন। ভরসা দিতে পারেননি ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিম। বোল্টের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন ৫ রান। আশার প্রদীপ হয়ে ছিলেন তিন নম্বরে নামা সৌম্য সরকার। ২২ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় বেশ চড়াও হয়েছিলেন তিনি। তবে ২২ বলে ৩০ রানের ইনিংসটি শেষ হয় হেনরির বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে।

৪২ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর দলের বিপর্যয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ মিঠুন আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিউই বোলারদের সামনে দুজনেই উইকেট বাঁচানোর লড়াইয়ে ছিলেন। ২৯ রানের ধীর গতির এই জুটি ভাঙে মাহমুদউল্লাহর (১৩) বিদায়েভ ফার্গুসনের বলে দুই দফায় বলটি তালুবন্দি করেন ব্রেন্ডন টেইলর। ৭১ রানে বাংলাদেশের ইনিংসের অর্ধেক শেষ হয়। স্যান্টনারের বলে ল্যাথামের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে সাব্বিরের সংগ্রহ ২০ বলে ১৩ রান। ২৭ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ২৬ রানের দারুণ একটা কার্যকর ইনিংস উপহার দেন মেহেদী মিরাজ।

একপ্রান্ত আগলে ধীরগতির ব্যাটিংয়ে লড়াই করছিলেন মিঠুন। তার সঙ্গী হন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। একপ্রান্ত আগলে রেখে ৭৩ বল ৪টি বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মিঠুন। আপাতদৃষ্টিতে ধীরগতির ইনিংস হলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় এটা ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দারুণ ব্যাটিং করেন সাইফউদ্দিন। হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে স্যান্টনারের শিকার হওয়ার আগে তিনি করেন ৫৮ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৪১ রান। মিঠুনের সঙ্গে তার ৮ম উইকেট জুটিতে আসে ৮৪ রান। ফার্গুসনের বলে মিঠুন থামেন ৯০ বলে ৬২ রানে। মুস্তাফিজের (০) বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে ৪৮.৫ ওভারে ২৩২ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ।