উখিয়া প্রতিনিধি।
হাতিয়ার ভাসানচর বসবাসের উপযোগী কিনা, তা দেখে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী শিবিরে পৌঁছেন রোহিঙ্গা নেতারা। এসব নেতা ভাসানচরে অবস্থানকালে সেখানকার অবকাঠামো নিয়ে প্রশংসা করলেও ক্যাম্পে ফেরার পর তাদের কণ্ঠে অন্য সুর শোনা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা বলেছেন, ভাসানচর ভালো লেগেছে। তবে দীর্ঘ বসবাসের উপযোগী কিনা বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় (৫ সেপ্টেম্বর) গত শনিবার উখিয়ার ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে যান রোহিঙ্গাদের ৪০ জন প্রতিনিধি। তাদের জন্য বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরে কী ধরনের ব্যবস্থা রেখেছে তা বর্ণনা করা হয়। এরপর তাদের (রবিবার ও সোমবার) দুই দিন পুরো আবাসন প্রকল্পের অবকাঠামো ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে। এ সময় তাদের সঙ্গে নৌবাহিনী, পুলিশসহ আরআরআরসি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সরকার ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবির থেকে কমপক্ষে এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা ওই দ্বীপে পাঠানোর অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেয়।

ভাসানচর ফেরা কুতুপালং ক্যাম্পের মৌলভী হাসিম,হেড মাঝি জকরিয়া,ওসমান,আয়াছ,নুরুল আমিন বলেন, কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শিবির ও পাহাড়ের পাদদেশে বসতির চেয়ে ভাসানচর উন্নত হবে, সেটি বলা মুশকিল। হয়তো বা এখানকার ঝুপড়ি ঘরের চেয়ে সেখানে গড়ে ওঠা থাকার ঘরসহ অন্যান্য অবকাঠামোগুলো মজবুত ও সুন্দর। সেই হিসাবে যদি বলি, ভাসানচর অনেক ভালো লেগেছে। তবে দীর্ঘ বসবাসের উপযোগী কিনা, বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে আমাদের। তাছাড়া সাগরের মাঝখানে জেগে ওঠা ভাসানচরে পৌঁছাতে দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়।
কুতুপালং ক্যাম্পের হেড মাঝি,আয়ুব খান,মোঃহামিদ বলেন,রোহিঙ্গারা ভাসানচর দেখতে যাওয়ায় তাদের বিদেশ থেকে হুমকি দমকি দিয়েছে।যার কারণে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

সেখানকার খাদ্য গুদাম, থাকার ঘর, আশ্রয় সেন্টার, মসজিদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, খেলার মাঠ ও কবরস্থানসহ মাছ চাষের পুকুর পরিদর্শন করেন রোহিঙ্গা নেতারা। এছাড়া সেখানে বিভিন্ন প্রকারের সবজির বাগান এবং সাগরের তীরে কেওড়া বাগান দেখে তারা মুগ্ধ হয়েছিলেন। ফেরার আগের দিন (সোমবার) সন্ধ্যায় তাদের ব্রিফিং করা হয়। যাতে ভাসানচরে যা যা দেখছেন তা যেন সঠিকভাবে ক্যাম্পে ফিরে অন্যদের জানাতে পারেন।
তবে ফেরার পর (মঙ্গলবার) তাদের অনেকের কাছে মতামত জানতে চাওয়া হলে তারা এড়িয়ে যান, আবার অনেকের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

