করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় চীনের তৈরি ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। ফলে বাংলাদেশে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল হতে যাচ্ছে ভ্যাকসিনটির। রোববার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএমআরসি’র পরিচালক ডা. মাহমুদ-উজ-জাহান।
তিনি বলেন, আইসিডিডিআরবি একটি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বাংলাদেশে করতে চাচ্ছে। নিয়ম হচ্ছে যে কোনও ট্রায়ালের জন্য নীতিগত অনুমোদন দেয় বিএমআরসি। তারা আমাদের কাছে এই ট্রায়ালের অনুমতি চেয়েছিল, আমরা এটা যাচাই-বাছাই করে, রিভিউ করে অনুমোদন দিয়েছি। তবে মাত্রই আমাদের মিটিং হলো, আইসিডিডিআরবিকে এখনও অফিসিয়াল চিঠি দিয়ে জানাইনি। তবে যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাই বলা যাচ্ছে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এরপর আইসিডিডিআরবি ঠিক করবে, তারা কীভাবে এর পরবর্তী পদক্ষেপে যাবেন। প্রাথমিকভাবে সাতটি সরকারি কোভিড হাসপাতালের সঙ্গে তারা বসবেন, কীভাবে পরবর্তী ধাপে ট্রায়াল শুরু করবেন, তাদের পার্টিসিপেন্ট সিলেকশন কীভাবে হবে। এসবের পর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছ থেকে বিভিন্ন ধাপের অনুমোদন বা অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে।
আইসিডিডিআরবি জনসংযোগ বিভাগে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে জানানো হয়, বিএমআরসি থেকে এখনও আমরা অফিসিয়াল চিঠি পাইনি। তারা চিঠি দিলে আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
ইতোমধ্যে চীন উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। চলছে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার প্রস্তুতি। বড় আকারে তৃতীয় ধাপের ভ্যাকসিন পরীক্ষা চালাতে ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমোদন পেয়েছে চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ (সিএনবিজি)। পাশাপাশি বাংলাদেশেও এর পরীক্ষা চালানোর আগ্রহ দেখায় দেশটি।
চীনে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত রোগী কমে যাওয়ায় এখন দেশের বাইরে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য জায়গা খুঁজছে দেশটি। বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকায় বাংলাদেশকে এর উপযুক্ত মনে করছে চীন।
এর আগে বাংলাদেশে আসা চীনের প্রতিনিধিদলকে বিদায় জানানোর সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, চীন করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। তাদের কাজে অগ্রগতিও অনেক। এ ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে সবার আগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে পাঠাবে বলে চীন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। চীনের করোনা সংক্রমণের সময় বাংলাদেশ যেভাবে পাশে ছিল, চীন সরকার সে উদারতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য সবার আগে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে।