৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন হবে সাড়ে দশ কোটি ভোটারের ঈমানের পরীক্ষা: শওকত বাঙালি

বিজয়ের মাসে ’৭১-এ পরাজিত গণহত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং তাদের সহযোগীদের ভোট না দিতে ভোটারদের প্রতি বিনম্র আহ্বান জানিয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও বিভাগীয় সমন্বয়ক লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি বলেছেন, ভোট একটি পবিত্র আমানত। এই ভোটযুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সৎ, দেশপ্রেমিক, মানবদরদী সজ্জন ব্যক্তিকে জয়ী করে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের মূল্যে অর্জিত আমাদের মহান জাতীয় সংসদকে ‘রাজাকারমুক্ত’ রাখার পবিত্র কর্তব্য পালনের জন্য প্রতিটি ভোটদাতার প্রতি সবিনয় আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যারা জাতীয় সংসদে বসবেন, তাদের ভেতর যে দল বা জোটের সদস্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবেন তারা সরকার গঠন করবেন, অন্যরা বিরোধী দলে থাকবেন। আমরা চাই আমাদের জাতীয় সংসদে সরকার ও বিরোধী দলÑ দুটোই হবে স্বাধীনতার পক্ষের। স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার এবং তাদের সন্তানরা নির্বাচনে বিজয়ী হোকÑ কোন দেশপ্রেমিক মানুষ কখনও তা কামনা করেন না। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন হবে সাড়ে দশ কোটি ভোটারের ঈমানের পরীক্ষা। ইসলাম ধর্মে বলা হয় ‘দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।’ আগামী নির্বাচনে আমাদের ঈমানেরও পরীক্ষা হবে। আমরা যদি বাংলাদেশকে ভালোবাসি, আমরা যদি গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠনকে ঘৃণ্য অপরাধ মনে করিÑ কখনও চাইব না দেশবিরোধী, দেশের উন্নয়নবিরোধী, মানবতার শত্র“রা নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জাতীয় সংসদে গিয়ে বসুক।

রাজাকারমুক্ত সংসদের প্রত্যাশা, তারুণ্যের প্রথম ভোট মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে দিতে এবং ’৭১-এর ঘাতক-দালাল, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক, আগুন সন্ত্রাসীদের ভোট না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, চট্টগ্রাম এবং জেলার বিভিন্ন শাখা ২৬ ডিসেম্বর, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা শীর্ষক জনসমাবেশ ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী আয়োজনে তিনি সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালির সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন-কবি আশীষ সেন, মহানগর যুবলীগ নেতা মো. হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহমেদ কুতুব, শিল্পী-সাংবাদিক আজিজুল কদির, সাংবাদিক ভূপেন দাশ, আশীষ আচার্য্য, সাজু চৌধুরী, কবি-গীতিকার আসিফ ইকবাল, জেলা নির্মূল কমিটি নেতা অ্যাডভোকেট রাজীব ভট্টাচার্য্য, শিক্ষানবীশ আইনজীবী মো. সাহাব উদ্দিন, মো. আবদুল হাকিম, বেলাল হোসেন, নির্মূল কমিটি ফটিকছড়ি উপজেলা সংগঠক শাহাদৎ হোসেন রবিন, পটিয়া উপজেলা সংগঠক মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, আনোয়ারা উপজেলা সংগঠক সুরজিৎ দত্ত সৈকত, চন্দনাইশ উপজেলা সংগঠক শাহাদাত নবী খোকা, বাঁশখালী নির্মূল কমিটি নেতা হাসানুর রহমান জিয়াদ, সাজ্জাদ বিন সাফা রিফাত, টিপু সিংহ, মো. হিমেল, অনু দে, আকাশ ধর, চন্ডি দাশ, মো. মহসিন, হৃদয় দাশ, আকাশ দাশ, বিজয় ধর, মো. ইমরান, মো. আলাউদ্দিন, বিজয় শীল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মানবতার জননী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দশ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অঙ্গনে যে অভূবপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তা বিস্ময়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ করছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হলে এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশের সারিতে বাংলাদেশকে দেখতে চাইলে শেখ হাসিনার নৌকায় ভোট দেয়ার কোনও বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতার ৪০ বছর পর সমুদ্রে, ভূমিতে এবং আকাশে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হয়েছে। মানুষের আয় তিন গুণ বেড়েছে। দেশে এখন কোন খাদ্যাভাব নেই, মঙ্গার কথা মানুষ ভুলে গেছে, লোড শেডিং-এর কথাও মানুষ ভুলে গেছে। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট গ্রামে গ্রামে পৌঁছে গেছে।

জনসমাবেশ শেষে লেখক-সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবির নির্মিত জামায়াত-বিএনপির জঙ্গী মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের প্রামাণ্য দলিল ‘ভুলি নাই’ চলচ্চিত্রের বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।