কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনী উত্তাপ বাড়ছে। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় কুতুবদিয়ায় এই উত্তাপ একটু কম হলেও থেমে নেই প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। এই আসনটি ছিনিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে মরণ কামড় দিয়ে মাঠে কাজ করছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। চোখের ঘুম হারাম করে রাত দিন ডোর টু ডোর প্রচারণা করে যাচ্ছেন তারা।
ফলে কক্সবাজার-০২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) এই আসনে হেভিয়েট প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারণায় এগিয়ে আছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী (বর্তমান এমপি) আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক। তিনি স্ব-শরীরের ভোটারের ঘরে ঘরে গিয়েও ভোট প্রার্থনায় সরব রয়েছেন। তাছাড়া তাঁর পক্ষে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রত্যেক ওয়ার্ডে দল, উপ-দল গঠন করে আ’লীগ সরকারের শাসন আমল বিগত ৫ বছরের উন্নয়নের কথা জনগনের দ্বারে দ্বারে প্রচার করে নৌকা মার্কায় ভোট খুঁজছেন। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পথসভাও করেছেন তিনি।
এদিকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আপেল প্রতীক (২০ দলীয় ঐক্যজোটের) মহানগর সহকারি জামায়াতের আমীর আলহাজ হামিদুর রহমান আযাদের সহধর্মীনী জেবুন্নেছা হামিদ সংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় আ’লীগ তাদেরকে বাঁধা দিচ্ছে। এমনকি প্রচারণার সময় গাড়ি এবং মাইক ভাংচুর করেছে। আইনশৃংখলা বাহিনী তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের আটকপূর্বক হয়রানী করে গেলেও কোন ধরণের প্রতিকার পাচ্ছে না।
অবশ্য কুতুবদিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর এ ব্যাপারে বলেন,আ’লীগের নেতাকর্মীরা তাদের গাড়ি ভাংচুর করেনি। হামিদুর রহমান আযাদ আর আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ ফরিদ উভয়ই ২০ দলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী দাবি তুলে নিজেরাই সংঘাতে জড়িয়ে প্রচারণার গাড়ি ভাংচুর করে আ’লীগের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।
প্রশ্নের উত্তর খোজে পাচ্ছে না সাধারণ ভোটাররা, ২০ দলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী কে ? মহানগর সহকারি জামায়াতের আমীর আলহাজ হামিদুর রহমান আযাদ, না-কি বিএনপির আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ ফরিদ ? প্রচার প্রচারনায় ২০ দল সমর্থীত প্রার্থীর ঘোষনা দিয়ে জামায়াতের মহানগর সহকারি আমীর এ আসনের সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব হামিদুর রহমান আযাদের পক্ষে মাইকিং করে যাচ্ছে। হামিদ রাজনৈতিক মামলায় জেল হাজতে থাকায় তাঁর পক্ষে মাঠে নেমেছে তার পরিবার ও আতœীয়স্বজন এবং দলীয় নেতাকর্মীরা। জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদের আপেল প্রতীকের পক্ষে নেতাকর্মীরা প্রচারণায় সরব হতে না পারলেও গোপনেই তার পক্ষে প্রচারণা চলছে বলে দাবী স্থানীয় নেতাকর্মীদের। স্থানীয় জামায়াতের নেতৃবৃন্দরা জানান,কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপি-জামায়তের ঘাটি। কিন্তু নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলা থাকায় মাঠে নামতে পারছে না কেউ। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিজয় তাদেরই হবে বলে ধারণা তাদের। এদিকে সাধারণ ভোটারদের ধারনা বিএনপি-জামায়াত পোলিং এজেন্ট দেওয়ার জন্যও লোক খোঁজে পাবে কি-না সন্দেহ।
এদিকে বিএনপির সাবেক সাংসদ আলমগীর মোঃ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ উচ্চ আদালতের রায়ে প্রার্থীতা এবং ধানের র্শীষ প্রতীক ফিরে ফেলেও কুতুবদিয়ায় প্রচারণা তেমন চোখে পড়ার মতো নয়। সাধারণ ভোটারগণ মনে করছেন। যেহেতু এ আসনে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ডক্টর আনছারুল করিম স্বতন্ত্র প্রার্থী (মাছ প্রতীক) আর জোটগত জাতীয় পার্টির আলহাজ মহিবুল্লাহ (নাঙ্গল প্রতীক) উভয়ই দলের কেন্দ্রীয় দলের নির্দেশে নৌকা প্রতীকের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন।
কিছু সংখ্যক স্থানীয় ভোটারগণ ধারণা করছে, বর্তমান পরিস্থিতি যদি নির্বাচন পর্যন্ত স্থির থাকে,তাহলে কুতুবদিয়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক বিপুল ভোটে এগিয়ে থাকবেন। আবার কিছু সংখ্যক ভোটারগণ ধারণা করছে উপরে নৌকার কথা বলে ভিতরে ধানের শীর্ষ প্রতীক আর আপেল প্রতীকের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার দলীয় আ’লীগের মধ্যে নব্য আশ্রয়লীগকে ভয় পাচ্ছে প্রকৃত আ’লীগ নেতাকর্মীরা।
এদিকে দ্বীপ জুড়ে নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠ দখলে রেখেছে নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা। উপজেলায় নৌকা প্রতীকের একক ছত্র প্রচারণা তুঙ্গে। অন্যান্য প্রতীকের প্রার্থীদের সমর্থকেরা নির্বাচনী প্রচারণায় ভয়ে ভয়ে মাঠে আসলেও ঠিকতে পারছে না।