নিজস্ব প্রতিনিধি
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউপির টেকপাড়ার উপর দিয়ে সদ্য সংস্কারকৃত বেড়িবাঁধ কেটে ব্যক্তি মালিকনায় নাশি (স্লুইস)বসানোর পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।
যার করণে সদ্য সংস্কারকৃত বেড়িবাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি আগামী বর্ষা মৌসুমে পানি ঢুকে স্থানীয়দের ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির ইন্ধনে তার অনুগত কয়েকজন ব্যক্তি তাদের ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এমন কান্ডে লিপ্ত থাকায় বেড়িবাঁধ সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীরা চরম আতংকে দিনাপাত করছে বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেশ প্রচার হচ্ছে।
স্থানীয়রা বেড়িবাঁধটির আশেপাশের মানুষদের রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈকা সাহাদাত, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও চকরিয়া- পেকুয়ার সাংসদ জাফর আলমের সুদৃষ্টি কামনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, পূর্ব উজানটিয়ার রুপালী বাজার থেকে শুরু করে পুরো উজানটিয়াবাসীর জন্য টেকপাড়া বেড়িবাঁধটি একমাত্র সহায়। গত বছর এই বেড়িবাঁধ সংস্কারবিহীন থাকা ও বেশ কয়েকটি নাশি দিয়ে পানি ঢুকে এলাকার ২০ হাজার মানুষ ক্ষতির সম্মোখিন হয়েছিল। ঘরবাড়ি, খেত, লবণ ছাড়াও তলিয়ে গিয়েছিল কোটি কোটি টাকার মৎস্য প্রজেক্টের মাছ। স্থানীয় মানুষের ব্যাপক অভিযোগের মুখে সাবেক ইউএনও মাহাবুবুউল করিম টেকপাড়ার বেড়িবাঁধ সরেজমিন পরিদর্শন করে নাশিগুলো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই সময় বড় ধরণের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছিল এলাকাবাসী।
এদিকে সাধারণ জনগণের ক্ষতির কথা চিন্তা করে দুঃখ লাগবে বর্তমান সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে উজানটিয়ার বেড়িবাঁধটি সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুই অংশের বেড়িবাঁধটির এক অংশের সংস্কার কাজ গত ১৫দিন আগে শেষ হয়। বাকি অংশের সংস্কার কাজ এখনো চলমান রয়েছে। এরই মাঝে প্রভাবশালীরা বেড়িবাঁধ কেটে নাশি (স্লুইস) বসানোর চেষ্টা করছে। জনগণের দুঃখ লাগবে গত বছর যেখানে ইউএনও নাশি বন্ধ করে দিয়েছিল সেখানে আবারো নাশি বসানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে তারা। তাদের অবৈধ স্বার্থের জন্য হাজার হাজার জনগণ কষ্ট পাবে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে নবাব শরীফ, ছাত্রলীগ নেতা নেওয়াজ সিকদার, এডভোকেট মীর মোশারফ হোসেন টিটু বলেন, দুই একজন ব্যক্তি তাদের নিজ স্বার্থের জন্য নাশি বসানোর চেষ্টা করছে। অথচ নাশি বসালে হাজার হাজার মানুষের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হবে। বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যাবে শতশত ঘরবাড়ি। নাশি বসানো বন্ধে আমরা স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ ছাড়াও মাননীয় এমপি মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তারা বলেন, উজানটিয়ার জনগণ ও আমরা বাঁচতে চাই, সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, টেকপাড়ার বেড়িবাঁধে সরকারী ও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক নাশি এবং স্লুইস গেইট রয়েছে। অনেক ব্যক্তি স্লুইস গেইট বন্ধ করে মৎস্য প্রজেক্ট করতেছে। ব্যক্তি মালিকনায় শতশত নাশি দিয়ে পানি ঢুকে আর বের করে মাছ করতেছে। বর্তমানে যেই জায়গায় নাশি বসানোর কথা বলা হচ্ছে সেখানে ৪শ খানি জমির একটি অনাবাদি প্রজেক্ট রয়েছে। ঘরবাড়ি নাই। এবারে জমির মালিকগণ মিলে সেই অনাবাদি প্রজেক্টটি সচল করার চেষ্টা করেতেছে। সেখানে একটি নাশি বসানোর দরকার হবে। যেই নাশি দিয়ে পানি ঢুকবে শুধু বের হবে অন্য জায়গা দিয়ে। আর এই নাশির কারণে যদি বেড়িবাঁধের ২শ ফুটের ভিতর কোন ক্ষতি হয় তাহলে তার সমস্ত কিছুর দায়ভার জমির মালিকগণ নিবে আমাকে অঙ্গিকার করেছে। তাদের পক্ষ থেকে ইউপি কার্যালয় প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অঙ্গিকারনামা দিব। এবিষয়ে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার পায়তারা শুরু করেছে। আর জনগণের ক্ষতি হয় মত কোন কাজ আমি করবোনা।
ইউএনও সাঈকা সাহাদাতের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, এবিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অবগত করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।