বাবার কাছে বেড়াতে গিয়ে ফেরা হলো না মায়ের কোলে

চন্দনপুরা এলাকায় নানার বাড়িতে বড় হয়েছেন মো. ফারুক (২৩)। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় তেমন একটা যোগাযোগ ছিল না তাদের।

গত এক বছরে ফারুকের নানার বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ বেড়েছে বাবার। মাঝে মধ্যে যাওয়া হতো বাবার কাছে।

গত বৃহস্পতিবার বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ফারুক। কিন্তু আর ফেরা হলো না মায়ের কোলে। রোববার (১৭ অক্টোবর) বায়েজিদ থানার বালুচরা এলাকার কাশেম কলোনিতে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ফারুকের।

ফারুকের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার বাবাকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেরে বেরিয়েছিলেন এলাকার আশপাশে ঘুরে দেখতে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন তিনি।

ছেলের এমন দুর্ঘটনা মেনে নিতে পারছেন ৬০ বছর বয়সী বদিউল আলম। খুব একটা চলাফেরা করতে না পারলেও এলাকায় দোকানদারি করে সংসার চালান তিনি। নিজের প্রথম সংসারের সন্তান দেখতে আসায় বেশ খুশি ছিলেন। কিন্তু বিস্ফোরণের এমন ঘটনায় হতবাক তিনিও।

বিলাপ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘অনেকদিন পর ছেলেকে কাছে পেয়েছি।  কিন্তু তাকে আগলে রাখতে পারলাম না’।

বদিউল আলম বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি ছিল ফারুক। টেইলার্সের দোকানে কাজ করতো আগে। এরপর থাই গ্লাসের কাজ করছিল। আমাকে দেখেতে এসে এমন পরিণতি হবে, তা কখনও ভাবতে পারিনি। আমি তার মাকে কি জবাব দিবো?

ফারুকের মরদেহ রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে স্বজনদের কাছে। বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও দুইজন শ্রমিক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি রয়েছে। তাদের শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় এখনও শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ডা. আলী জামান।