স্বামীর মৃত্যুর পর ঠাই হয়নি স্বামীর ঘরে

শফিউল আলম, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ রাউজান উপজেলার ২নং ডাবুয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের রামনাথ পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী শংকর দে” এর কন্যা রিয়া দে (২২) এর ধর্মীয় সামাজিক অনুষ্টানের মাধ্যমে একই উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কদলপুর রায়চান পাড়ার বাবুল দে” এর পুত্র মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী দেবব্রত দের সাথে বিবাহ হয় গত ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে । বিয়ের সময়ে স্বর্ণলংকার, ফর্নিচার, বিভিন্ন মালামাল যৌতুক দেয়া হয় । বিবাহের অনুষ্টানে ১ হাজার ৩শত জন বরযাত্রীকে ভোজ করানো হয় । রিয়া দে অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর রিয়াকে রেখে স্বামী দেবব্রত দে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমালে শ^াশুড়ী রেবা দে, ভাসুর সুব্রত দে, গবিন্দ দে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। শ^াশুড়ী, ভাসুরের নির্মম নির্যাতন সহ্য করে রিয়া স্বামীর ঘরে দিন যাপন করেন । ২০ মাস রিয়াকে তার বাপের বাড়ীতে যেতে দেয়নি । রিয়ার স্বামী দেবব্রত দে এর প্রবাসের আয়ের টাকা দিয়ে রাউজান উপজেলা ডাকঘরে একটি এফ, ডি আর করে। রিয়ার স্বামী দেবব্রত দে প্রবাস থেকে দেশে এসে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার ফুলতলা এলাকায় শ^াশুড় শ^াশুড়ী, ভাসুরদের সাথে ভাড়া বাসায় রিয়াকে নিয়ে বসবাস করেন । রিয়ার স্বামী দেবব্রত দে প্রবাসের আয়ের টাকা দিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারস্থ ফুলতলায় দোকান ক্রয় করে। রিয়ার স্বামী দেবব্রত দে দোকান ক্রয় করা ছাড়া ও প্রবাসের আয়ের টাকা দিয়ে শ^াশুড়ী ও ভাসুরদের জন্য বিপুল পরিমান টাকা ব্যয় করে। রিয়ার স্বামী দেবব্রত দে দেশে এসে তার টাকা দিয়ে ক্রয় করা দোকানের ডেকেরেশনের কাজ শুরু করে। দোকানের ডেকোরেশনের কাজ করার সময়ে গত ১১ মে সকালে দোকানে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় । দেবব্রত দে ” এর মৃত্যুর পরদিন ১২ মে সকালে রিয়ার ভাসুর সুব্রত দে সুব্রত দে ” এর ভাড়া বাসার দেবব্রত দে ” এর কক্ষের আলমিরা খুলে রিয়ার ১৩ ভরি ওজনের স্বর্ণলংকার, দোকানের দলিল, ডাকঘরের এফ, ডি আর বই, দোকানের মালামাল ক্রয় করার জন্য আলমিরায় রক্ষিত ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায় । এ বিষয়ে রিয়া দে প্রতিবাদ করলে সুব্রত দে ও তার পরিবারের সদস্যরা রিয়াকে হুমকি ও নির্যাতন করে। ঘটনার ব্যাপারে রিয়া দে বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানায় অভিযোগ করার পর গত ১১ জুন শুক্রবার চকবাজার থানার পুলিশ চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারস্থ ফুলতলা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে রিয়াকে উদ্বার করে তার পিতা শংকর দে ” এর হাতে সোর্পদ করে। রিয়া দে আরো অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামীর প্রবাসের আয়ের টাকা দিয়ে করা ডাকঘরের এফ ডি আর, ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করার প্রচেষ্টা ও স্বামীর আয়ের টাকা দিয়ে ক্রয় করা দোকান ভাসুর তার দখলে নেওয়ার প্রচেষ্টায় মেতে উঠেছে ।রিয়ার ভাসুর গবিন্দকে মোবাইল ফোনে ফোন করে রিয়ার অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে, রিয়ার ভাসুর গবিন্দ একটি জরুরি কাজে ব্যস্ত রয়েছে বলে জানিয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেয় । রিয়া দে অল্প বয়সে স্বামী হারিয়ে স্বামীর ঘরে ঠাই না পেয়ে রিয়া তার পিতা শংকর দে” এর বাড়ী রাউজানে দিনযাপন করছেন । কদলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসলিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেবব্রত দে মারা যাওয়ার পর তার ভাই সুব্রত দে এসে আমার কাছ থেকে ওয়ারিশান সনদ নিয়ে গেছেন । ওয়ারিশান সনদে রিয়া দে ” কে দেবব্রত দে ”এর স্ত্রী হিসাবে দেখানো হয়েছে । গতকাল ১৪ জুন রিয়া দে” কে ও একই ওয়ারিশান সনদ দেওয়া হয়েছে ।