কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের বিএনপি মনোনিত প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, উখিয়া ও টেকনাফে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও পরিকল্পিত হামলা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের সব জায়গায় নালিশ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কেউ বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতনের প্রতিকার করছেন না। প্রতিকার না পেয়ে হামলা ও মামলার ভয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
শুক্রবার(২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
একই সাথে তিনি অভিযোগ করেছেন, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার যে সমস্ত প্রিসাইডিং ও সহ প্রিসাইডিং এবং পোলিং অফিসারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে যারা আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোনো নিরপেক্ষ কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে তালিকায় রাখা হয়নি।
সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী দাবি করে বলেন, টেকনাফে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি লুটপাঠ এবং পুলিশের পোশাকে ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে। হ্নীলায় এক প্রবাসী যুবক দুবাইতে বসে সাংসদ বদির হুমকীর বিরুদ্ধে পেইজবুকে মতামত প্রকাশ করায় রাত্রে পুলিশ গিয়ে তার বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাঠ করেছে। টেকনাফ উপজেলার বিএনপির সভাপতি মোঃ জাফর আলমকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল্লাহ বদির মিথ্যা মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
তিনি দাবি করেন, সাবরাংয়ে বিএনপি নেতা সোলতান আহমদ মেম্বারের বাড়ীতে গিয়ে তাকে এক মাসের জন্য বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি। এই বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করায় সোলতান মেম্বার ও টেকনাফ উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হাশেম মেম্বারসহ আট নেতাকে আটক করে চোখ বেঁধে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। দুদিন থানায় আটকে মামলা ছাড়াই তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও সংসদ সদস্য এমপি বদি নিজে গিয়ে শামলাপুরের ছাত্রদল নেতা রাসেল এবং জসিমকে ধরে নিয়ে গেছে। এখনও কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাদের। যুবদল নেতা ফয়সালকে আটক করা হলেও তাকে এখনো আদালতে পাঠানো হয়নি। উখিয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান সোলতান মাহমুদ চৌধুরীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি জানান, টেকনাফে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ছয়টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলা ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩২ নেতাকর্মীকে। উখিয়া থানায় চারটি মিথ্যা মামলায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৫ নেতাকর্মীকে।
জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী বলেন, প্রথম দিকে এমপি আবদুর বদি হুমকি দিলেও বর্তমান এমপি ও পুলিশ নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এতে ভয়ে পুরো টেকনাফ বিএনপি কর্মী হয়ে পড়েছে।
শাহজাহান চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে জানান, গত ১৮ ডিসেম্বর তাঁর একটি নির্বাচনী পথসভা ছিল উখিয়া থানার ২০০ গজের মধ্যে। কিন্তু পথসভার শুরুর আগেই নৌকার প্রার্থী শাহীন আকতার ও সংসদ বদির আত্মীয়-স¦জন এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে শাহজাহান চৌধুরীর মঞ্চ, চেয়ার, টেবিল ভাংচুর করে। কিন্তু এই ঘটনার রেশ ধরে ১৭ ডিসেম্বরের ঘটনা দেখিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
শাহজাহান চৌধুরী দাবি করেন, শুরুর দিকে অভিযোগ শুনলেও এখন তাৎক্ষণিক অভিযোগ জানাতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ফোন করলে তিনি ফোনও ধরেন না। অভিযোগের কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। রিটার্নিং অফিসার প্রধান নির্বাচন কমিশনার, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের সবাই এখন নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে দাবি করেন শাহজাহান চৌধুরী। গত বৃহস্পতিবারও জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার কক্সবাজার সাথে বৈঠক করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।