বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান বলেছেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে এদেশের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই বিজয়কে ত্বরান্বিত করেছিল। জীবনবাজি রেখে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার মধ্য দিয়েই শ্রমজীবী মানুষের অসামান্য ত্যাগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।

১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল ১০ টায় নগরের জামাল খানস্থ কার্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে নগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন ফেডারেশনের নগর সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী। আরো বক্তব্য রাখেন মহানগরীর সহ-সভাপতি মকবুল আহমদ ভূঁইয়া।
এস এম লুৎফর রহমান বলেন, “ইতিহাস থেকে শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগ পরিকল্পিতভাবে আড়াল করা হয়েছে। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে তাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে জনগণের সম্পৃক্ততা কোনো একক ব্যক্তি বা দলের কারণে ছিল না। অথচ মুক্তিযুদ্ধকে একটি ব্যক্তি বা একটি দলের সম্পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করা হয়েছে, যা মুক্তিযুদ্ধ ও শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগকে চরমভাবে অসম্মান করার শামিল।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের স্বাধীনতা অর্জনে শ্রমিকরা যেমন লড়াই ও আত্মত্যাগ করেছে, তেমনি দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামেও শ্রমজীবী মানুষের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। “কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রতিবার রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর শ্রমিকদের অবদান ভুলে যাওয়া হয়েছে। ফলে শ্রমিকরা সমাজ ও রাষ্ট্রে অবহেলিত ও নির্যাতিত হয়ে পড়েছে,” বলেন তিনি।
লুৎফর রহমান বলেন, রাষ্ট্র ও মালিক পক্ষের কাছে শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে শোষণ ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। তাদের নাগরিক ও মৌলিক অধিকার আজও পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে জুলুমের শিকার হওয়াই যেন শ্রমজীবী মানুষের নিয়তিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর—সব ধরনের শোষণ ও বঞ্চনার অবসান ঘটানোর। যারা শ্রমিকদের আত্মত্যাগকে সম্মান করবে এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করবে, শ্রমজীবী মানুষ তাদের পক্ষেই কণ্ঠ উঁচু করবে।”
তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, শ্রমিকদের অধিকার পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেই দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে।
সবাই আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর অর্থ সম্পাদক মুহাম্মদ নুরুন্নবী, শিক্ষা ও প্রশিক্ষন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মজুমদার, পাঠাগার সম্পাদক ইঞ্জি: সাইফুল ইসলাম, আইন আদালত সম্পাদক সাব্বির আহমদ উসমানি প্র্রমূখ।









