বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা কোনো প্রতিহিংসা কিংবা প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। তবে আমরা চাই শেখ হাসিনাসহ যারা গুম খুন নির্যাতনের অপরাধে জড়িত তাদের সবার বিচার হোক। অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি অতিদ্রুত দৃশ্যমান বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য। বিএনপি বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী না।
শনিবার (২২ মার্চ) বিকালে চট্টগ্রামের লেডিস ক্লাবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে এক মত বিনিময় ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এ কথা বলেন।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “আমরা ১৬ বছর আন্দোলন করেছি বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার মূল বাহক হচ্ছে নির্বাচন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য মূল বাহক হচ্ছে জনগণের ভোটে একটি নির্বাচিত সরকার। একটি সংসদ যারা বাংলাদেশের মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা, যা এই আন্দোলনের মাধ্যমে যে পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, তা পূরণ করতে পারবে”।
সাবেক এই মন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন “আজকে আমরা দেখেছি বিগত দিনে শেখ হাসিনা যেটা পূরণ করতে দেয়নি, যেভাবে নির্বাচন বিহীন অবস্থায় বাংলাদেশকে শাসন করে গেছে, জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়েছে, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে এটা ফেরত দেওয়ার মূল বাহক হবে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠ নির্বাচন”
“আরেকটি শক্তি অন্যভাবে সেটা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা একভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে এরা কিন্তু অন্যভাবে এটা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের নির্বাচন না হতে পারলে মনে হয় তারা খুব খুশি। সেই প্রক্রিয়া যাতে শুরু না হয়,” বলেন তিনি।
দেশে এখন কোনো নির্বাচিত সরকার নেই জানিয়ে এই নেতা আরো বলেন “বাংলাদেশে একটি সরকার আছে তারা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয় নাই তাই জনগণের কাছে কোন জবাবদিহি নেই।“
চট্টগ্রামে বিএনপির মধ্যে দলীয় কোন্দলের বিষয়ে প্রশ্ন করলে আমির খসরু বলেন “ বিএনপি নেতাকর্মীদের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠামাত্র বহিষ্কার করা হচ্ছে। আগে বহিস্কার পরে তদন্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দুই হাজারের কাছাকাছি নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা পত্রিকা বা যেকোনোভাবে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। এটি উদাহরণ হয়ে থাকছে। অভিযোগ পেলে প্রথমেই কোনোরকম তদন্ত ছাড়া বহিষ্কার করা হচ্ছে। “
“পরবর্তীতে অপরাধের সঙ্গে জড়িত না বলে প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের দলে ফেরানো হচ্ছে। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি যারা অপরাধে জড়িত, তারা যে দলেরই হোক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এক্ষেত্রে দলমত বিবেচনা করার দরকার নেই। আমরা নিজেরা সরকারে থাকলেও এটাই করতাম,” বলেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে নগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ বলেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপি আপসহীন আন্দোলন চালিয়ে যাবে। দেশের জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশের গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সত্য প্রকাশের মাধ্যমে তারা দেশ ও জাতির সামনে বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। সাংবাদিকরা সবসময় সত্য ও ন্যায়বিচারের পক্ষে থাকবেন, এটাই জনগণের প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, আবুল হাসেম বক্কর উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ।