শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে কোচিং ও গাইড বইয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে এগুলো বন্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিলেও কাজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার।
তিনি বলেন, প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারের সংখ্যা বাড়ছে। গাইড বইয়ের বিক্রিও বাড়ছে। একই সঙ্গে এসবের প্রতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঝোঁকও বাড়ছে। এ কারণে শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোচিং বা গাইড বই বন্ধ করা যাবে না। বরং কেন এগুলোর চাহিদা তৈরি হচ্ছে; এসবের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে, তা আগে বুঝতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কেন এগুলোর ওপর নির্ভরশীল, সেটাই এখন মূল প্রশ্ন।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনমূলক মূল্যায়ন পদ্ধতি’ বিষয়ক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নানা অসঙ্গতি রয়েছে। এ কারণেই হয়তো গাইড বই, কোচিং-প্রাইভেটের চাহিদা অব্যাহতভাবে বাড়ছে। কেন এ চাহিদা তৈরি হচ্ছে; কেন শিক্ষার্থীরা এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে, তা খুঁজে বের করতে হবে। শুধু কোচিং সেন্টার বন্ধ করলেই সমস্যার সমাধান হবে কি না, সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। এখানে রাষ্ট্রের করণীয় কী, তা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
সি আর আবরার বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক দুর্বলতা রয়েছে। আমরা হয়তো দায়িত্বে থাকবো না। কিন্তু কিছু জিনিস আমরা হয়তো দিয়ে যেতে পারছি; যেগুলো পরবর্তীসময়ে যারা দায়িত্ব নেবেন, তারা এগুলো করবেন।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফল ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখাতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে পেছনে ফেলে দেওয়ার বড় ধরনের পরিকল্পনা ছিল। এর চূড়ান্ত উদাহরণ আমাদের এসএসসি ও এইচএসসির রেজাল্ট। সেটার যে একটা বিশাল সমারোহ, ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো; সেটার মধ্যে আমরা দেখেছি।
‘শিক্ষার্থীরা লিখে নম্বর পাবেন, এটাই হওয়ার কথা। কিন্তু রাষ্ট্র তাদের নম্বর উপহার দেবে, এটা একেবারেই খারাপ বিষয় ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি, এটা বাদ দেওয়ার এবং আমার মনে হয় সেটা থেকে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা উপকৃত হয়েছে’- যোগ করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান।
সেমিনারে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুকান্ত সাহার উদ্ভাবিত ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি করা এবং শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করার বিষয়ে সৃজনশীল এ মডেলটি ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ নামে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এর মাধ্যমে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। শিক্ষার্থীদের ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষকদেরও পরোক্ষভাবে মূল্যায়ন করা হয়।











