সবার আগে ভারতের দাদাগিরি বন্ধ করতে হবে: মির্জা ফখরুল

জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছেন কেন—জামায়াতের উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভালো হয়ে যান। নির্বাচনের প্রস্তুতিতো আপনারা অনেক আগে থেকেই নিয়েছেন। আজকে আপনাদের অনেক বড় বড় বিলবোর্ড দেখলাম, অন্য দলেরতো তেমন বড় বিলবোর্ড দেখলাম না। তবে কেন জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছেন?

শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সরকারি কলেজ মাঠে পদ্মা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারাতো নির্বাচন করবেন। নির্বাচন না করলে আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না।

দেশের এই সংকটকালে একটি দল সংকটকে আরও গভীর সংকটে নিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে সংস্কারের সনদ সই করলাম পার্লামেন্টের সামনে। এখন হঠাৎ করে সেই দলটি বলতে শুরু করেছে আমাদের পিআর দরকার। যে জিনিস বাংলাদেশের মানুষ বোঝেনা, সেই জিনিস মানুষের ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে কার ইঙ্গিতে? তারা লাফিয়ে উঠেছেন ক্ষমতায় যাবেন বলে।

জামায়াত নেতাদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত নির্বাচনে কত পার্সেন্ট ভোট পেয়েছিলেন? ভোট পেয়েছিলেন ৫-৬ পার্সেন্ট, রাতারাতি লাফ দিয়ে ৫১ পার্সেন্ট হয়ে যাবেন—এটা মনে করিয়েন না। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের সহজে ভোট দেবে না। কারণ আপনাদেরকে জনগণ বিশ্বাস করে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, পাকিস্তান আন্দোলনের সময় আপনারা তার বিরোধিতা করেছিলেন। ১৯৭১ সালে আমরা যে স্বাধীনতা যুদ্ধ করলাম পাকিস্তান থেকে রেরিয়ে আসার জন্য, তখন আপনার শুধু বিরোধিতাই করেননি, পাকিস্তানি মিলিটারির সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহত্যাও করেছেন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন এই নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনের বিকল্প নেই। কারণ নির্বাচন যত দেরি হচ্ছে বাংলাদেশ তত দুর্বল হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারত যখন তখন পানি বন্ধ করে দেবে, সীমান্তে মানুষ হত্যা করবে, যখন তখন চাউল বন্ধ করে দেবে, পেঁয়াজ বন্ধ করে দেবে এই বড় দাদাগিরি আমরা দেখতে চাই না। আমরা দেখতে চাই, ভারত আমাদের সঙ্গে সত্যিকার অর্থে সমান মর্যাদার ভিত্তিতে সহযোগিতা করবে। অন্যথায় ভারত কখনই বাংলাদেশের মানুষকে বন্ধু হিসেবে পাবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, পদ্মা আন্তর্জাতিক নদী। আন্তর্জাতিক নদী হিসেবে পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যা আমাদের অধিকার, কোনো দয়া নয়।

ভারতের দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্র করছেন, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘোষণা দিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ হারুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু, অধ্যাপক শাহজাহান মিঞা, আমিনুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরীফ উদ্দীন, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সফিকুল হক মিলনসহ স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ।