নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর)। ১৯৪৮ সালের এই দিনে তিনি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট হিমু ও মিসির আলি চরিত্রগুলো আজও অনুপ্রেরণা দেয় তরুণদের। তার নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ পেয়েছে অসামান্য দর্শকপ্রিয়তা। তবে তার টেলিভিশন নাটকগুলো ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়।
সংখ্যায় বেশি না হলেও তার রচিত গানগুলোও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার অন্যতম উপন্যাস হলো নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি।

তার নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেঁটুপুত্র কমলা ইত্যাদি। বাংলা সাহিত্যের এ জাদুকর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। লেখালিখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাকে আটক করে এবং নির্যাতনের পর হত্যার জন্য গুলি চালায়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। তার রচিত উপন্যাস থেকে জানা যায় যে ছোটকালে হুমায়ূন আহমেদের নাম রাখা হয়েছিলো শামসুর রহমান; ডাকনাম কাজল।
তার বাবা (ফয়জুর রহমান) নিজের নামের সাথে মিল রেখে ছেলের নাম রাখেন শামসুর রহমান। পরবর্তীতে আবার তিনি নিজেই ছেলের নাম পরিবর্তন করে হুমায়ূন আহমেদ রাখেন।
হুমায়ূন আহমেদের ভাষায়, তার বাবা ছেলে-মেয়েদের নাম পরিবর্তন করতে পছন্দ করতেন। তার ছোট ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবালের নাম আগে ছিলো বাবুল এবং ছোটবোন সুফিয়ার নাম ছিল শেফালি। ১৯৬২-৬৪ সালে চট্টগ্রামে থাকাকালে হুমায়ুন আহমেদের নাম ছিলো বাচ্চু।
হুমায়ূন আহমেদ তার দীর্ঘ চার দশকের সাহিত্যজীবনে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার মধ্যে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস।
দেশের বাইরেও সম্মানিত হয়েছেন হুমায়ুন এনএইচকে টেলিভিশন তাকে নিয়ে ‘হু ইজ হু পুরস্কার উল্লেখযোগ্য আহমেদ। জাপানের ইন এশিয়া’ শিরোনামে ১৫ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র প্রচার করে। হুমায়ূন আহমেদ দুইবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালে গুলকেতিন আহমেদকে তিনি বিয়ে করেন। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে প্রথম স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেন।
তার ৯০ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত এক বাগানবাড়ি আছে। বাগানবাড়িটির নাম নুহাশপল্লী। তিনি সেখানেই থাকতে ভালোবাসতেন। এই জননন্দিতশিল্পী ২০১২ সালের ১৯ জুলাই এক বর্ষণমুখর দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।











