আমিরাতে মিরসরাইয়ের পরোপকারী রেমিটেন্স যোদ্ধার বিদায়

মিরসরাই প্রতিনিধি ::
পরিবারের মুখে হাঁসি ফোটানোর জন্য দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাতে প্রবাস জীবন পার করেছেন তিনি। একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে দিন রাত পরিশ্রম করে উপার্জিত অর্থ পাঠিয়েছেন নিজ দেশে। প্রবাসে এগিয়ে আসতেন মানুষের বিভিন্ন বিপদে আপদে। অসহায় আর বিপদগ্রস্থ প্রবাসীদের সহায়তা করতেন সাধ্যের সর্বোচ্ছ দিয়ে। অথচ গ্রামের নিজ ঘরটিও পাঁকা করে যেতে পারেননি নুরুল আলম। কিডনী জটিলতায় আরব আমিরাতের আল আইনে জিমি হাসপাতালে মৃত্যুবরন করেছেন তিনি। বাড়ীতে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও তিন শিশু কন্যার জীবনে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তা।
মিরসরাইয়ের ধুম ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার টেন্ডল বাড়ীর বাসিন্দা নুরুল আলম গত কিছুদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এরপর ভর্তি হয়েছিলেন আল আইন জিমি হাসপাতালে। কিডনী জটিলতায় ১০ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মৃত্যুবরন করেন তিনি ।
নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে একসময়কার জাপান অটো ইউজসড স্পেয়ার্স পার্টস এর স্বত্তাধিকারী করেরহাটের সাইফুল বলেন, তিনি প্রচন্ড রকম পরোপকালী মানুষ ছিলেন। সেখানে একটি টেইলার্স দোকান পরিচালনা করতেন নুরুল ইসলাম। আয় রোজগার যা হতো তা থেকে বাড়ীতে কিছু পাঠিয়ে আর সবটুকু মানুষের উপকারে ব্যয় করে দিতেন। বিশেষ করে প্রবাসে নিজ এলাকা মিরসরাইয়ের মানুষের জন্য ছিলো তার অন্য রকম ভালোবাসা। মানুষের বিপদে সাধ্যমতো হাত বাড়িয়ে দিতেন সব সময়।
প্রবাসী শেখ নাসির জানান, গত ত্রিশ বছর ধরে তিনি আল আইনে আছেন। আল আইন এলাকায় এক সময় নুরুল ইসলাম ভাইয়ের আয় রোজগার খুবই ভালো ছিলো। সে সময় মিরসরাইয়ের কোন মানুষ নুরুল ইসলাম ভাইয়ের কাছে সাহায্যের জন্য এসে ফিরে যেতে হয়নি। গত ৪/৫ বছর ধরে উনার আয় রোজগারে ভাটা পড়ে গেলেও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করতেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাত মিরসরাই সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, আল আইনের জিমি হাসপাতালে কিডনী জটিলতায় মৃত্যু বরন করেছেন ধুম ইউনিয়নের রেমিটেন্স যোদ্ধা নুরুল ইসলাম। যেহেতু তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না তাই, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি লাশটি দেশে স্বজনদের মাঝে পাঠানোর জন্য। বৈশ্বিক মহামারির কারনে বর্তমানে লাশ পরিবহনের কার্গো বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অচিরেই কার্গো বিমান চলাচল শুরু হলে আমরা লাশটি দেশে পাঠাতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।