চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ৪ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে শাখা ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি উপাচার্য বরাবর জমা দেওয়া হয়।
তাদের দাবিগুলো হলো— ১. অবিলম্বে চাকসু নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও রোডম্যাপ প্রকাশ করা। ২. চাকসু নির্বাচনের পূর্বে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কার এবং গৃহীত সকল বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ সংশোধন করা। প্রশাসনিক সংস্কার পূর্বক বিতর্কিত পক্ষপাতদুষ্ট ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে না রাখা। সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করা। ৩. শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখা এবং বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতি কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব না করে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। ৪. ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভয়ের সংস্কৃতি দূর করে বিগত সময়ে ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া সকল গুপ্ত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা।
দাবিগুলো ছাড়াও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়— ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জোরালো দাবি তুলেছে। এরই প্রেক্ষিতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন দ্রুত কার্যকর করা এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
‘সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এর পর দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও পর্যন্ত চাকসু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা চূড়ান্ত করতে পারেনি, ফলে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত সংশয় ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। নেতৃত্বের বিকাশ এবং শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া আদায়ে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি প্রয়োজন।’
‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে কিছু ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন, যারা অতীতে ফ্যাসিবাদী শক্তির সহযোগী ছিলেন। এই ধরনের ব্যক্তিরা চাকসু নির্বাচন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে এসব অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে হবে।’
‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, চাকসু হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর অধিকার ও মতপ্রকাশের অবাধ প্ল্যাটফর্ম। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়, নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশ এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় চাকসুর বিকল্প নেই।’
‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল প্রত্যাশা করে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য দাবিগুলো যথাযথ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ চাকসু নির্বাচন আয়োজন সম্পন্ন করবে।’