মির্জা ইমতিয়াজ শাওন, প্রিয় চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ‘জব্বারের বলী খেলা’য় ১১৬তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ বলী। ফাইনালে একই জেলার বলী রাশেদকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। ফাইনালে প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টা লড়াই চলে। গতবারও রাশেদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন শরীফ।
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ‘জব্বারের বলী খেলা’য় ১১৬তম আসরে দেশের বিভিন্ন এলাকার মোট ১২০ জন বলী নিবন্ধন করেছিলেন যার মধ্য থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে অংশ নেন ৮০ জন বলী।
চট্টগ্রাম সিটি করোপরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। পুরস্কারের মধ্যে ছিলো চ্যাম্পিয়নের জন্য একটি ক্রেস্ট ৩০ হাজার টাকা যা পেয়েছেন বাঘা শরীফ, রানারআপের জন্য একটি ক্রেস্ট ও ২০ হাজার টাকা যা রাশেদ বলী। প্রথম রাউন্ডের বিজয়ী ৪০ জন পান দুই হাজার টাকা করে প্রাইজ মানি।
বিকাল ৪টায় বলী খেলার উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বলীখেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আবদুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল।
লালদীঘি মাঠে নির্মিত বিশেষ বালুর মঞ্চে শুরু হয় বলী খেলা। টানা সোয়া দুই ঘণ্টা ধরে চলে বলী খেলা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে চ্যাম্পিয়নের ফলাফল ঘোষণা করেন মেলা কমিটির সদস্যরা।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে এ খেলার আয়োজন হয়। ১৯০৯ সাল থেকে চট্টগ্রামে লালদিঘীর ময়দানে জব্বারের বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আবদুল জব্বার সওদাগর এই বলী খেলার প্রবর্তন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ বৈশাখ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় বলী খেলার ১১৬তম আসর।
আবদুল জব্বারের বলীখেলাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে। এতে বাহারি সব পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন দেশের নানা জেলা থেকে আসা হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এ মেলা চলবে শনিবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত। বলীখেলাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার থেকে লালদীঘি ময়দানের আশপাশের এলাকাজুড়ে বৈশাখীমেলা জমে উঠেছে। মেলা আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, ১৯০৯ সালে এই মেলার আয়োজন শুরুর পর কখনও বন্ধ ছিল না। তবে দুই বছর করোনা মহামারির কারণে খেলা এবং বৈশাখী মেলার ১১১ ও ১১২তম আসর বাতিল করা হয়।
এরপর থেকে পুনরায় প্রতি বছর যথাসময়ে (১২ বৈশাখ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে।