ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডে হাসিনাসহ জড়িতদের ফাঁসির দাবি

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে সড়কে বসে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে নগরের জামালখান এলাকায় সড়কে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

এ দিকে রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ছাত্রদের জুস খাইয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি ভাঙান। এর আগে রাত ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক ছুটে আসেন অনশনস্থলে।
সেখানে অনশনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রাসেল আহমেদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে মোবাইলফোনে কথা বলিয়ে দেন ডিসি। এরপর ডিসি আবার ছাত্রদের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসে পরে রাত ৯টার দিকে আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন রাসেল আহমেদ।

এ সময় তিনি বলেন, আমরা তিনদিন সময় দিয়েছি।
এই সময়ের মধ্যে আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আমরা আবার আমরণ অনশনে বসব।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় গতবছর জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার-ফাঁসির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। ওই সমাবেশ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আট দফা দাবি জানানো হয়।

এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রাসেল আহমেদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ দিকে অনশনের কারণে সড়কের একপাশে যান চলাচল বন্ধ হলেও আরেকপাশে যানচলাচল স্বাভাবিক ছিল। সড়কের একপাশ বন্ধ থাকার কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ওই কর্মসূচি ঘিরে আইন শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।

অনশনকারীদের আট দফা দাবি হলো—শেখ হাসিনাসহ পালিয়ে যাওয়া সবাইকে দেশে ফিরিয়ে এনে হত্যার ঘটনায় বিচার করতে হবে; বিচারের ক্ষেত্রে যতক্ষণ দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া না হবে, বিচারের বিষয়ে আশ্বস্ত করা না হবে, ততক্ষণ অনশনে থাকবেন তারা; দ্রুত বিচার আইনে বিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার-বিচার করতে হবে; শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার করতে হবে; জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করতে হবে; সব হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, অপরাধ ও নির্যাতনের বিচার করতে হবে; আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে; আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধভাবে অর্জিত সব অর্থ ও সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাজেয়াপ্ত করতে হবে; বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে হবে; জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জীবনের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে; নতুন সংবিধান প্রণয়ন করাসহ রাষ্ট্রের যাবতীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা প্রদান করতে হবে।