রাউজানে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ব্যবসায়ীর জানাযা ও দাফন সম্পন্ন

শফিউল আলম, রাউজানঃ অশান্ত রাউজানে দুর্বৃত্তের গুলিতে গতকাল শুক্রবার নিহত হয়েছেন চট্টগ্রামের এক স্বনামধন্য ব্যবসায়ী দানশীল ব্যক্তি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম। তাকে গুলি করা হয়েছে দক্ষিণ রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিষপাড়া বাড়ির কাছে জুমা নামাজ আদায়ে যাওয়ার পথে। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আব্বাস ও ইদ্রিস নামের আরো দুইজন। তারা দুজন জাহাঙ্গীর আলমের সাথে একই মোটরসাইকেলে ছিলেন। জাহাঙ্গীর ছিলেন সবার পিছনে। গতকালের এই ঘটনায় সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।

নিহত ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম ওই গ্রামের মরহুম হাজী আবু সৈয়দ মেম্বারের ছেলে। তিনি নগরের খাতুনগঞ্জ এলাকার শুঁটকি পল্লীর একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও দানশীল ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত। ঘটনা সর্ম্পকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ব্যবসায়ী পাড়ার একটি ক্লাবের অনুষ্ঠান শেষে মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য মোটরসাইকেলে পার্শ্ববর্তী মসজিদে যাচ্ছিলেন। ওই সময় মুখোশপরা ১০ থেকে ১২জনের একদল দুর্বৃত্তকে ভারী অস্ত্র হাতে এগিয়ে আসতে দেখা যায় সিসি ফুটেজে। হঠাৎ মুখোশধারী এক দুর্বৃত্ত জাহাঙ্গীরকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এসময় জাহাঙ্গীর আলমের মাথায় ও অপর দুজনের শরীরে গুলি লাগলে তারা মাটিতে লুটে পড়েন। স্থানীয়রা এই ঘটনা দেখে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। জাহাঙ্গীরকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে নোয়াপাড়া পথের হাটে ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। নিহত ব্যবসায়ীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দলে দলে মানুষ শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে সেখানে ছুটে যায়। পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের আহাজারিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহতের এক আত্মীয় আনোয়ার হোসেন বলেছেন, তার খালোতো ভাই ব্যবসায়িক কারণে বিদেশে গিয়েছিলেন। গতকাল ফিরে বাড়ি এসেছিলেন মা–বাবার জেয়ারত ও জুমার নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে। এরমধ্যে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের সদস্য, আত্মীয়–স্বজন কেউ ধারণা করতে পারছে না কারা কী কারণে এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
স্থানীয় সকলেই এক বাক্যে বলেছেন জাহাঙ্গীর কোনো সময় রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। তার কাজ ছিল ব্যবসা, সামাজিক কাজ, গরীব অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করা।
তবে কেউ বলছেন, এই ব্যবসায়ীর কাছে সন্ত্রাসীরা মোটা অংকের টাকা দাবি করেছিল, আবার কেউ বলছেন দুর্বৃত্তদের ‘টার্গেট’ ছিল অন্য একজন। তারা ‘টার্গেট’ ভুল করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

২৫ জানুয়ারী শনিবার বিকালে মরহুম জাহাঙ্গীর আলমের জানাজার নামাজ তার বাড়ী নিরামিশ পাড়ায় অনুষ্টিত হয় । জানজার নামাজে ছিল শোর্কার্ত মানুষের ভীড়।
এ বিষয়ে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ঘটনার ব্যাপারে রাউজান থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। এই হত্যাকান্ড কারা সংগঠিত করেছে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ।

এদিকে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন এক বিবৃতি রাউজানে আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিহত ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সেই সাথে হত্যায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিও জানায়। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন রাউজান উপজেলা শাখার সভাপতি সাইফুদ্দিন পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জসীম উদ্দিন প্রমুখ।
মা হারালেন সাংবাদিক হাবিব
শফিউল আলম, রাউজান ঃ রাউজান প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি দৈনিক আমাদের সময় রাউজান প্রতিনিধি, হাবিবুর রহমানের মাতা হোসেন আরা বেগম গতকাল ২৫ জানুয়ারী শনিবার ভোররাতে নিজ বাড়ীতে ইন্তেকাল করেন । মৃত্যুকালে মরহুমা স্বামী ২ ছেলে ও তিন কন্যা সন্তান সহ অনেক গুনগ্রাহি রেখে যায় । মরহুমা হোসেন আরা বেগমের জানাজার নামাজ গতকাল ২৫ জানুয়ারী রাউজান পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বেরুলিয়া রাউজান ফায়ার ষ্টেশনের পাশে অনুষ্টিত হয় । জানাজার নামাজে রাউজান প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ্ব ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ্ব উপস্থিত ছিলেন । মরহুমা হোসেন আরা বেগমের মৃত্যুতে রাউজান প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেন ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান ।