কাপ্তাইয়ের বাজারে পাহাড়ী বল বরইয়ে সয়লাব, স্বাবলম্বী হচ্ছে চাষীরা

মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই(রাঙামাটি): বল বরই বা কুল বরই নামে পরিচিত এই ফলটি। দেখতে সুন্দর ও খেতে টক, মিষ্টি। সুস্বাদু এই ফলটির কদর রয়েছে সারাদেশে। পার্বত্যাঞ্চলের পাহাড় ও সমতলে বেশ ভাল ফলন হয়ে থাকে বল বরইয়ের। কয়েক দশক ধরে পার্বত্য এলাকায় আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস ও অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বল বরই চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সঠিক মূল্য পাওয়া, অনুকূল আবহাওয়া, অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম হওয়া সহ এই ফলে রোগ-বালাই কম হওয়ার কারণে বল বরই চাষে মানুষের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে। অনেক চাষী মৌসুমি চাষাবাদের পরিবর্তে স্থায়ীভাবে নিজের জমিতে বল বরই চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাউ কুল, আপেল কুল, নারকেল কুল, বল সুন্দরী এবং কাশ্মীরী কুল বরইয়ের চাষাবাদ হচ্ছে। তবে খেতে টক হওয়ায় দেশী জাতের কুলের চাহিদা কমছে। এক্ষেত্রে মিষ্টি জাতের কুলের চাহিদা রয়েছে দেশের সর্বত্র।
সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন হাটে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় এলাকায় উৎপাদিত বল বরই বা কুল বিক্রয় করতে আসছে চাষীরা। তবে হাটে বল সুন্দরী জাতের কুলের সরবরাহ বেশি। চাষীদের কাছ থেকে এই সুস্বাদু ফলটি কিনতে ভিড় করছে ক্রেতারা। স্থানীয় হাটে প্রতি কেজি বরই ১শ’৫০ থেকে ২শ’ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। কেউ কেউ কেজি হিসেবে আবার কেউ পাইকারী দরে ক্রয় করতে দেখা যায়।
কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে নানা জাতের কুলের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে বল সুন্দরী জাতের বরইয়ের চাষ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। হেক্টর প্রতি ২০ টন হিসেবে গড়ে প্রায় ৩শ’ টন কুলের চাষ হচ্ছে।
কাপ্তাইয়ের বল বরই চাষী সমিরন তনচংগ্যা, স্বপ্না প্রু মারমা জানায়, পাহাড়ের এসব কুল খেতে বেশ সুস্বাদু হওয়ায় সারাদেশে এই কুলের কদর রয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলার বেশিভাগ বাগানের বরই পরিপক্ক হয়েছে। ফলে বর্তমানে স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই বরই নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এতে প্রান্তিক চাষীরা বেশ লাভবান হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইমরান আহমেদ জানান, সাধারনত রবি মৌসুমে অর্থাৎ শীতকালে এই বরই পাক ধরে। কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় এই বল বরই বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে স্থানীয় চাষীদের বিভিন্ন সহযোগীতা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কাপ্তাইয়ের বল বরই চাষীরা বেশ লাভবান হবে বলে তিনি আশা করছেন।