রাউজানে বিষমুক্ত সবজির বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

শফিউল আলম, রাউজানঃ রাউজানে মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে শীতের সবজি। বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক প্রস্ফুটিত হচ্ছে। বিভিন্ন সবুজ শাক আর লাল শাকে লাল-সবুজের বাংলাদেশের একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। দিগন্তজুড়ে সবুজের সমারোহ আর কৃষকের সবুজ স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এখানকার হাজার হাজার কৃষক।উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের সব জায়গায় কমবেশি সবজি চাষ করা হয়েছে।উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলা জুড়ে ৯৫০হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি ক্ষেতের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, বেগুন, মুলা, আলু, বরবটি, মরিচ, সীম, লাল শাক, পালং শাক, খিরা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ভূট্টা, সরিষা, টমেটো, বাদাম, মিষ্টি আলু,ধনিয়া পাতা, পুদিনা পাতা, শষাসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি।

সংশ্লিষ্ট তথ্য মতে, ২২৫ হেক্টর জমিতে আলু, ২২০ হেক্টর জমিতে মরিচ, ৩৫ হেক্টর জমিতে টমেটো, ১৬৫ হেক্টর জমিতে সীম, ২শত হেক্টর জমিতে সরিষা ও ১শত হেক্টর জমিতে বেগুন, ১শত হেক্টর জমিতে ফুলকপি ও বাধাকপির চাষবাদ করা হয়েছে।

বর্তমান বাজার মূল্যে ফুলকপি প্রতি কেজি ৭০ টাকা, বাধাকপি প্রতিকেজি ৭০ টাকা, নতুন আলু প্রতি কেজি ১শতটাকা, লাউ আকার ভেদে ৫০-৮০টাকা, প্রতি কেজি লাউ ৪০ টাকা বেগুন, ৭০টাকা থেকে ৮০ টাকা। রাউজান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক আব্দুল শুক্কুর জানান, ১৬০ শতক বর্গা জমিতে ফুলকপি, বাধাকপি, লাউ, টমেটো, আলু, মরিচ চাষ করেছি। প্রতি ৪০ শতকে ৮০ আড়ি করে বর্গা ধান দিতে হয়। শীতকালীন সবজি চাষে দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। দাম ভালো থাকায় দ্বিগুন লাভ হবে বলে আশাবাদি তিনি। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামার্শ মতে ফেরোমন ফাঁদ ও হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করেছি। ফেরোমন পদ্ধতি আগে ব্যবহার করলেও হদুল ফাঁদ পরিক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে সফল হয়েছি।উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার জন্দ বলেন, রাউজানে ৮ হেক্টর জমিতে হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে। হলুদ রংয়ে আকৃষ্ট হয়ে পোকাগুলো বসলেই আটকে যায়। পোকা দমনে হলুদ ফাঁদ (নতুন পদ্ধতি) পরিক্ষামূলকভাবে প্রথমবার ব্যবহার করে সফলতা পাওয়া যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, এই উপজেলার মাটি ও পরিবেশ কৃষকদের অনুকূলে রয়েছে। রাউজানের বিভিন্ন এলকায় বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করার জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সবজি ক্ষেতের পোকা-মাকড় দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে সেক্সপেরোমন ও হলুদ ফাঁদ (নতুন পদ্ধতি) পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।তিনি আরো বলেন, সবজি ক্ষেতে ফেরোমন ফাঁদ ও হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। কীটনাশাক ব্যবহার করে উৎপাদিত সবজি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। একারণে তারা কৃষকদের কীটনাশক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে বিষমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত সবজি চাষে উৎসাহিত করছি।