মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি): আর্থিক সংকটে সংস্কার বিহীন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে কাপ্তাইয়ের ঐতিহ্যবাহী “প্রগতি সংসদ” ক্লাবটি।
দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে কাপ্তাই নতুন বাজারে অবস্থিত ক্লাবটির কোন মেরামত কাজ না করায় এটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রগতি সংসদ ক্লাবটি বিগত ৩১ মে’ ১৯৭৮ সালে স্থাপিত হয়। উপজেলা সমাজ কল্যাণ অফিস থেকে এটি সরকারিভাবে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। যার রেজিঃ নং-রাঙামাটি -২২(৬৮৫)৭৮, তারিখ- ৩১/৫/৭৮ইং। এটি ঐক্য, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও সমাজ কল্যাণ মূলক অরাজনৈতিক একটি প্রতিষ্ঠান। প্রগতি সংসদ ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সরকারের টিকা কর্মসূচী, আশ্রায় কেন্দ্র, শিশু শিক্ষা, বিবাহ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সমাজ কল্যাণ মূলক কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছিল।
এছাড়া, ক্লাবটি থেকে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে সুনাম অর্জন করেছিল। অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন হিসেবে ক্লাবটি রাঙামাটি জেলার মধ্যে সকলের নিকট সু-পরিচিত ছিল। ধীরে ধীরে ক্লাবটিতে অর্থের অভাব সহ পরিচালনা সমস্যয় দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক যাবত ক্লাবটি সংস্কার বিহীন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে ক্লাবের উপরের কোন ছাদ বা টিন নেই। দীর্ঘ বছর পরিত্যক্ত পড়ে থাকায় ক্লাবের ভিতরে বড় বড় গাছ জন্মেছে। সকল কাগজপত্র, আলমেরী, চেয়ার, টেবিল বৃষ্টির পানিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি উইপোকার আক্রমণে আসবাবপত্র গুলি মাটিতে মিশে গেছে। উপজেলার এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী প্রগতি সংসদটি এখন সংস্কার বিহীন পরিত্যক্ত ও জীর্ণদশায় ধ্বংসে পরিনত হয়েছে।
এব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার প্রগতি সংসদের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু, সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন ও কার্যকরী সদস্য মহিউদ্দিন জানান, ঐতিহ্যবাহী প্রগতি সংসদটি ওই সময় যারা পরিচালোনা করত তারা অনেকেই এখন বেঁচে নেই। এছাড়া নানা কারণে বহু বছর ক্লাবটি পরিচালনার দায়িত্ব কেউ নেয়নি। ফলে ধীরে ধীরে এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ক্লাবটি রাঙামাটি জেলার মধ্যে একটি নাম করা সংগঠন। এখানে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচী পালনসহ সামাজিক কাজ পরিচালনা করা হতো। এই ক্লাব হতে জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে অনেক খেলোয়াড় বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে সুনাম অর্জন করেছে। বর্তমানে ৫ লক্ষাধিক টাকার অনুদান পেলে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে ক্লাবটি পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। সংস্কার হলে আমরা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবো। তারা আরও বলেন, ক্লাবটি সংস্কার হলে পূর্বের ন্যায় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচীতে ক্লাবের ব্যবহার সহ সমাজের বিভিন্ন কল্যাণ মূলক কাজ করা হবে। তাই এটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ সকল মহলের সহযোগিতা প্রয়োজন।