করোনার হটস্পট সাতকানিয়া থেকে এ কে আজাদ :
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত সিরাজুল ইসলাম নামে ৬৯ বয়সী এক বৃদ্ধের সংস্পর্শে থাকায় এখন তাঁর বেয়াই বাড়ির পুরো পরিবারই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-এ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৯ এপ্রিল করোনা উপসর্গে মারা যাওয়া বৃদ্ধ সিরাজুল ইসলামের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর করোনা পজিটিভ আসে। এরপর তাঁর সংস্পর্শে থাকা ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে পাঁচজনের করোনা শনাক্ত হয়। তাঁরা বর্তমানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রযেছেন।
এরপরই ওই বৃদ্ধের জামাতার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে তাঁরও করোনা পজিটিভ আসে। তাঁকে আইসোলেশনে পাঠানোর পর পরই তাঁর পুরো পরিবারকে লকডাউন করে রাখা হয়। অন্য স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শেষে রোববার রাতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী
করোনার সংক্রমণ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন চট্টগ্রামে প্রথম করোনায় মারা যাওয়া বৃদ্ধ সিরাজুল ইসলামের মেয়ে, তাঁর স্বামী, শ্বাশুড়ি, ভাসুর, ভাসুরের স্ত্রী ও তাদের দুই ছেলে। অর্থাৎ মৃত সিরাজুল ইসলামের সংস্পর্শে এসে এখন তাঁর বেয়াই বাড়ীর সবাই করোনা আক্রান্ত হলেন। এ পর্যন্ত সাতকানিয়ায় ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি সিরাজুল ইসলাম মারা যান।
এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-এ আলম বলেন, উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের ইছামতি আলীনগর গ্রামে মৃত্যুর পর করোনা শনাক্ত হওয়া বৃদ্ধ সিরাজুল ইসলামের দাফনে অংশ নিয়েছিলেন তাঁর জামাতা। এরপরই তাঁর করোনা শনাক্ত হয়। এ ছাড়া তাঁর সংস্পর্শে থাকা পরিবারের আরো ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়।
ইউএনও আরো জানান, বেশ কয়েকজনের করোনা উপসর্গ থাকায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সাতকানিয়া উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এর পরও অনেকে লকডাউন অমান্য করে বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়ে ঘোরাঘুরি করে। সরকারের নির্দেশ অমান্য করে দোকান খোলা রাখার কারণে বেশ কয়েকজনকে জরিমানাও করা হয়েছে। এখন লকডাউন কার্যকরের জন্য প্রয়োজনে প্রশাসন কঠোর হবে। তাই সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি জানান, রবিবার (২৬ মার্চ) ১০১ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার ৭ জন এবং লক্ষ্মীপুর জেলার ৩ জন।
চট্টগ্রামে শনাক্ত হওয়া ৭ জনের মধ্যে ৬ জন সাতকানিয়া উপজেলার ও ১ জন নগরের দামপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ জন।