শিল্পী সমিতি নিয়ে কেন এত বিতর্ক

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। চলচ্চিত্রের শিল্পীদের একটি প্রাণের সংগঠন। তবে সেই সংগঠন এখন পরিণত হয়েছে অন্যতম বিতর্কিত সংগঠনে। বিতর্ক, আলোচনা, সমালোচনা যেন পিছু ছাড়ছে না এ সমিতির। বিশেষ করে গতবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ দেখেছে দেশের মানুষ। দেখেছে শিল্পীদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে টানাহেঁচড়ার গল্পও। আদালত পর্যন্ত গড়ায় সেই ঘটনা। শিল্পীদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এতসব ঘটনা অবাক করেছে সবাইকে। যদিও শেষ পর্যন্ত চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারকেই দেখা গেছে সাধারণ সম্পাদকের পদটিতে আসীন হতে। তবে বিতর্ক থেমে থাকেনি এখানেই।

তবে অনেক সিনিয়র শিল্পীরাও শিল্পী সমিতির কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সময়ে।
ক’দিন আগেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে নব্বই দশকের অন্যতম নায়িকা শিল্পী বলেন, কোনো অনুষ্ঠান সকালে হলে তার আমন্ত্রণপত্র বাসায় যায় রাতে। তখন তো যাওয়ার কোনো উপায় থাকে না। তাছাড়া ফোন করেও কখনো ডাকা হয় না শিল্পীদের। শিল্পী সমিতির শিল্পীরা শুধু সম্মান চায়। কিন্তু অসম্মান পেতে হলে তো সেখান থেকে দূরে থাকাই ভালো। আর শিল্পীদের নির্বাচন হবে সুন্দরভাবে। লাঠিসোটা নিয়ে বসে থাকতে হবে, আদালত পর্যন্ত যেতে হবে। এটা তো কেউ আশা করে না। এদিকে বর্তমান শিল্পী সমিতির সঙ্গে মতের অমিল থাকায় সেখান থেকে ক’দিন আগেই পদত্যাগ করেছেন সমিতির সহ-সভাপতি সাইমন সাদিক। অভিমান থেকে তিনিও এবারের নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচন করবেন না জায়েদ খানও। অবস্থা যখন এই, ঠিক তখন নির্বাচনের আগে শিল্পী সমিতির বনভোজন অনুষ্ঠিত হয় ২রা মার্চ। আর সেখান থেকে জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিলের ঘোষণা দেয়া হয়। বনভোজনের মতো আনন্দ আয়োজন থেকে এমন ঘোষণায় অবাক হয়েছেন সিনেমা সংশ্লিষ্ট অনেকেই। বিষয়টি নিশ্চিত করে চলচ্চিত্র পরিষদ নেতা খোরশেদ আলম খসরু জানান, কোনো রূপ সাংগঠনিক দুর্বলতা না পেয়ে জায়েদ খান ব্যক্তিগত আক্রোশ ধারাবাহিক ভাবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিসহ সাধারণ সম্পাদকের নামে মিথ্যা, মনগড়া, কুরুচিপূর্ণ কল্পকাহিনী সাংবাদিক সম্মেলন, ইউটিউব, ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করায় গত ০২/০৪/২০২৩ তারিখে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।

এর বিপরীতে জায়েদ খান বলেন, আমি একজন ব্যক্তির আক্রোশের শিকার। শিল্পী সমিতিতে সে নিজের মতো করে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। আমার সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্তের আগে অন্তত আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়ার প্রয়োজন ছিল। সেটাও করেনি। আমি চিঠিও হাতে পাইনি। তবে আমি আইনিভাবেই সব কিছু মোকাবিলা করবো। চলতি বছরের ১৯শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এরইমধ্যে চলচ্চিত্রের সিনিয়র শিল্পী মিশা সওদাগর ও ডিপজল নিজেদের প্যানেল ঘোষণা দিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে নিপুণ প্যানেল গড়বেন অমিত হাসানকে সভাপতি করে। তবে বর্তমান সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন নির্বাচন করবেন না। শুধু তাই নয়, বর্তমান কমিটির অনেকেই এবারের নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ পাচ্ছেন না বলেও জানিয়েছেন মানবজমিনকে। কারণ সবার মতের সমান গুরুত্ব দেয়া হয় না বলে মনে করেন তারা। এদিকে শিল্পী সমিতির নির্বাচিত সদস্য ও নায়ক জয় চৌধুরী গতকাল এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, শিল্পী সমিতির নাম চেঞ্জ করে ব্যক্তিগত সমিতি দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।