ঘূর্ণিঝড়ের আগে-পরে কী করবেন

প্রিয় চট্টগ্রাম ডেস্ক::
ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বন্যা, খরা, ভূমিধস, টর্নেডো, শৈত্যপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিবছর ব্যাপক সম্পদ ও প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে ও জলোচ্ছ্বাসে সম্পদ ও প্রাণহানির পরিমাণ ব্যাপক। এ বিষয়ে জনগণকে, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসীদের সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি।

প্রবল ঝড়ের পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রেখে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা জরুরি। এ ধরনের দুর্যোগ দেখা দিলে যতটা সম্ভব আগেভাগে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। অনেকে বাড়িঘর রেখে অন্য কোথাও যেতে চান। কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে, সবার আগে জীবন বাঁচানো জরুরি। তাই আপনার বাড়ি যদি নিরাপদ না হয় সেক্ষেত্রে অন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে জনগণের করণীয় বিষয়গুলো জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।

উঁচু স্থান বা সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার পথ প্লাবিত হওয়ার আগেই নিরাপদে পৌঁছান। কয়েক দিনের জন্য পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিন। ওষুধ, শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিংবা বৃদ্ধদের জন্য বিশেষ খাবার সঙ্গে রাখুন।

আপনার বাড়ি যদি উঁচু স্থানে নিরাপদভাবে নির্মাণ করা হয়, তাহলে সেখানকার নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন।
জরুরি নথিপত্র এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য অবশ্যই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলুন।

আপৎকালীন প্রয়োজনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী যেমন খাদ্য, পানি, ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত করে রাখুন।

ঝড়ের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ও পাওয়ার ব্যাংকগুলিকে চার্জ দিয়ে রাখুন।

সংবাদপত্র, টিভি, রেডিওতে আবহাওয়া সংক্রান্ত খবরের দিকে নজর রাখুন। অযথা আতংকিত হবেন না।

বাড়িতে গৃহপালিত প্রাণী থাকলে তাদের বাঁধন খুলে রাখুন।

বৈদ্যুতিক লাইন এবং গ্যাস সরবরাহের মেইন সুইচ বন্ধ রাখুন।

দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন। অযথা ঘর থেকে বেরবেন না।

কাঁচা বাড়ি কিংবা কোনও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ভেতরে থাকবেন না, নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন। প্রয়োজনে আশ্রয়স্থলে আশ্রয় নিন।

ভেঙে পড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি কিংবা বৈদ্যুতিক তারে হাত দেবেন না।

ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তার মানে হলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিপদের ভয় আছে। তাই পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা সতর্ক থাকুন।

সমুদ্র উপকূলের নিম্নাঞ্চল কিংবা উপকূলের কাছে অন্যান্য নিম্নাঞ্চল থেকে দূরে থাকুন।

জানালা কাঁচের হলে তা হার্ড বোর্ড দিয়ে ঢেকে রাখুন। ঘরের বাইরের দিকের দরজার ক্ষতি এড়াতেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।

রান্না ছাড়া খাওয়া এমন খাবার সংরক্ষণ করুন। ঢাকনাওয়ালা পাত্রে অতিরিক্ত পানযোগ্য পানি সংরক্ষণ করুন।

বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে হলে সম্ভাব্য বন্যার ক্ষতি এড়াতে মূল্যবান জিনিসপত্র উঁচু স্থানে রাখুন।

প্রবল বাতাসে উড়ে যেতে পারে, এমন জিনিসপত্র একটি কক্ষে নিরাপদে রাখুন।

বাতাস শান্ত হয়ে গেছে মনে হলেও ঘর থেকে বের হবেন না। বাতাসের গতিবেগ পরবর্তীতে আবারও বাড়তে পারে এবং তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় শেষ হয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণার আগে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকুন।

নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা হন। সম্পত্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না।

আশ্রয়কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নির্দেশনা অনুসরণ করুন।

ছেড়ে না যেতে বলার আগ পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রেই থাকুন।

বাড়িতে ফিরে যাওয়ার নির্দেশনা পাওয়ার আগ পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করুন।

বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে তার ছড়িয়ে পড়লে তা সতর্কতার সঙ্গে এড়িয়ে চলুন।

গাড়ি চালাতে হলে সতর্কতার সঙ্গে চালাবেন।

বাড়ির আঙিনা থেকে বর্জ্য পদার্থ দ্রুত পরিষ্কার করুন।

ঝড়ে ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানান।