২৯ লাখের বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং চট্টগ্রাম বন্দরে

২০১৮-১৯ অর্থবছরে গড়ে ২০ ফুট দীর্ঘ (টিইইউ’স) হিসেবে ২৯ লাখ ১৯ হাজার ২৩টি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। প্রাথমিক হিসাবে এ তথ্য জানা গেছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৮ লাখ ৮ হাজার ৫৫৪ টিইইউ’স কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল। তখন প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ১৯ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে হ্যান্ডলিং ছিল ২৫ লাখ ৩ হাজার ৪৭১ টিইইউ’স।

>> সাড়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা আদায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে

কনটেইনারের ছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খোলা পণ্যবাহী জাহাজ ও অয়েল ট্যাংকারে জ্বালানি ও ভোজ্যতেল আমদানি হয়। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের হিসাব সম্পন্ন হয়নি।

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি), জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) কয়েকটি জেটিতে কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়ানো হয়। এর মধ্যে সিসিটি ও এনসিটিতে কিগ্যান্ট্রি ক্রেন দিয়ে গিয়ারলেস (ক্রেন ছাড়া) জাহাজের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সুযোগ রয়েছে। জিসিবিতে জাহাজের নিজস্ব ক্রেন দিয়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়।

বন্দরের একজন কর্মকর্তা জানান, এনসিটি টার্মিনালে ৬টি নতুন কিগ্যান্ট্রি ক্রেন বসানো, ইয়ার্ড সম্প্রসারণের মাধ্যমে কনটেইনার ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার ১৮টিতে উন্নীত করা, ব্যাকআপ ফ্যাসিলিটি বাড়ানো, আধুনিক বন্দর ব্যবস্থাপনার কারণে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। জুলাই-আগস্টে নতুন চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত হলে, সঠিক সময়ে পিসিটি অপারেশনে গেলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগের চাপ সামাল দিতে পারবে চট্টগ্রাম বন্দর। দীর্ঘমেয়াদে পায়রা, সোনাদিয়া সমুদ্রবন্দর চালুর পাশাপাশি বে-টার্মিনালের প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) খায়রুল আলম সুজন বলেন, বৃষ্টি ও ঢেউয়ের পানি, প্রখর রোদসহ বৈরী আবহাওয়া থেকে বাঁচিয়ে নিরাপদ ও সহজ হ্যান্ডলিংয়ের জন্য বিশ্বব্যাপী কনটেইনারের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশের আমদানি-রফতানির ৯২ শতাংশ কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পরিবহন করা হয়। বাকি ২ শতাংশ মোংলা বন্দর দিয়ে। এবার হ্যান্ডলিং প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। গত অর্থবছরে যা ছিল ১২ শতাংশের বেশি। এর জন্য মৌসুমি কিছু কারণ থাকে। যেমন- ঘূর্ণিঝড় ফনী, উৎসবকে ঘিরে দেশজুড়ে কলকারখানায় সপ্তাহব্যাপী ছুটি, জাতীয় নির্বাচন, গাড়ি, ফিনিশড প্রোডাক্টসহ কিছু পণ্যের আমদানি কম হওয়া ইত্যাদি। তবে আশার কথা ক্যালেন্ডার ইয়ার হিসাব করলে হয়তো আরও ছয় মাস সময় আছে, যাতে প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে।

শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, অর্থবছরজুড়ে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য খুশির খবর। নতুন নতুন হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট, পিসিটি চালু এবং বে-টার্মিনালের কাজ শুরু করা গেলে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৮ লেনে উন্নীত করা হলে, রেল ও নদীপথে ঢাকাগামী কনটেইনার পরিবহন বাড়ানো গেলে চট্টগ্রাম বন্দর জাতির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে। বিশেষ করে মিরসরাই-সীতাকুণ্ডে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, দেশজুড়ে শতাধিক স্পেশাল ইকোনমিক জোন, মাতারবাড়ীসহ মেগাপ্রকল্পগুলোর চাহিদা বিবেচনায় রেখে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বাড়াতেই হবে।