তিন স্টেশন দিয়ে যাত্রার অপেক্ষায় মেট্রোরেলের দ্বিতীয় পর্ব!

নতুন তিনটি স্টেশন দিয়ে চলতি মাসেই যাত্রা শুরু করছে মেট্রোরেলের দ্বিতীয় পর্ব। এরই মধ্যে স্টেশন তিনটি পরোপুরি প্রস্তুত। এছাড়া স্টেশনের সঙ্গে ফার্মগেটের সরাসরি সংযোগে রাখা হচ্ছে বিশেষ পথ। একই ব্যবস্থা থাকছে কারওয়ানবাজারেও। এছাড়া উচ্চতা বেশি হওয়ায় এ দুটি স্টেশনে যে আলাদা একটি করে ফ্লোর রয়েছে, সেখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

গতিহীন ঢাকায় বিরামহীন চলার স্বপ্ন ডানা মেলেছে গত ডিসেম্বরে। এখন শুধু সেই পাখায় ভর করে গন্তব্যে পৌঁছানোর পালা। বলা হচ্ছে, মেট্রোরেলের কথা। এমআরটি লাইন সিক্সের হাত ধরে শুরু এ মেট্রোযাত্রা। প্রথমে উত্তরা থেকে আগারগাঁও; এবারের গন্তব্য মতিঝিল।

চলতি মাসের শেষেই শুরু হবে সেই পথে চলা। প্রাথমিক লক্ষ্য তিনটি স্টেশন – ফার্মগেট, সচিবালয়, আর মতিঝিল। প্রথমে তিন ঘণ্টা, পরে পর্যায়ক্রমে বাড়বে সময়, যুক্ত হবে একেকটি করে স্টেশন। সেই লক্ষ্যে দুই পর্ব এক করে এখন চলছে সমন্বিত ট্রায়াল রান। এরপরই শুরু হবে বাণিজ্যিক যাত্রা।

এরই মধ্যে প্রস্তুত তিনটি স্টেশন। ফার্মগেটে কনকর্স লেভেল আর প্ল্যাটফর্ম তৈরি শেষ। এ পথে যাত্রীদের জন্য বড় সুবিধা হচ্ছে স্টেশন খামারবাড়ি রোডে হলেও কয়েকশ মিটার দূরে ইন্দিরা রোডে অর্থাৎ তেজগাঁও কলেজের সামনে আর ফার্মগেট বাসস্টান্ড থেকে থাকবে ওঠা-নামার ব্যবস্থা। আবার ফার্মগেট আর কারওয়ানবাজারে একটি ফ্লোর বেশি থাকায় সেখানে থাকছে বাড়তি বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ব্যবস্থা। তবে এসব পরিসেবা পেতে কিছুটা সময় লাগবে সাধারণের।

ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ২৯ অক্টোবর উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁও থেকে ট্রেনে চড়ে মতিঝিল যাবেন। সেখানে নামফলক উন্মোচন করবেন। এরপর ট্রেনে চড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশনে নেমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকায় দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন। এরপর উত্তরা-আগারগাঁও মেট্রোরেলের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরই মধ্যে এই অংশের সব স্টেশন চালু হয়েছে। এখন মেট্রোরেল সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল করছে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ উদ্বোধন করেন।

মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।

মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।