কক্সবাজার রেললাইনের মাটি সরিয়ে পানিই তার পথ করে নিল

গত কয়েক দিনের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ। বন্যায় রেললাইনের নিচে মাটি ধসে কয়েক জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। রেললাইনের নিচে গর্ত দিয়ে এপার থেকে ওপার সাঁতারও কাটা যাচ্ছে। শুধু গর্ত নয়, কোথাও কোথাও রেললাইন দেবে গেছে। পাথর সরে যাওয়াসহ রেলবিটও খুলে গেছে। এ অবস্থায় দুই মাস পর ট্রেন কক্সবাজার যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

আজ শুক্রবার সাতকানিয়া-লোহাগাড়া অংশে কক্সবাজার রেললাইন সরেজমিন পরিদর্শন করেন আজকের পত্রিকার প্রতিবেদক। পরিদর্শনে সাতকানিয়ার তেমুহানি ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার রেললাইন পাঠানপুল ও কেরানীহাট অংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা যায়। প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আদার মায়ের মাজার থেকে পাঠানপুল পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রেললাইন। অন্তত ১০টি অংশে রেললাইন থেকে একেবারে পাথর সরে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় পাথর পাশের জমিতে গিয়ে পড়েছে। রেললাইন দেবে গেছে, রেলবিটও উঠে গেছে।

রেললাইনে বড় বড় গর্তের নিচে জমে আছে পানি। স্থানীয় আরমান উর ইসলাম রেললাইনের নিচ দিয়ে সাঁতার কেটে দেখান এই প্রতিবেদককে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত পাঁচ দিন তেমুহানি এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার রেললাইন পানিতে ডুবেছিল। রেললাইনের ওপরে হাঁটুসমান পানি হয়। নৌকাও গেছে, এই রেললাইনের ওপর দিয়ে।

রেল কর্তৃপক্ষ কক্সবাজার রেললাইনে ২৪৫টি কালভার্ট ও ৩৯টি ব্রিজ নির্মাণের কথা জানায়। কিন্তু আদার মা মাজার থেকে মৌলভীর দোকান পর্যন্ত দুই কিলোমিটারজুড়ে মাত্র দুটি কালভার্ট দেখা গেছে। এসব কালভার্টের নিচ দিয়ে পানি খুব কমই নামছে। এতে দু-এক দিনের বৃষ্টিতে পানি জমে বাড়িতে উঠে যাচ্ছে।

মো. জুবায়ের নামে আরেক স্থানীয় বলেন, ‘রেললাইনে পর্যাপ্ত কালভার্ট আর ব্রিজ না থাকায় দুই কূলে পানি উঠেছে। পানি যেতে না পারায় রেললাইন পর্যন্ত পানি উঠে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই কয়েকটি কালভার্টের জন্য আমরা মানববন্ধনও করেছিলাম।’

রেল প্রশাসন গতকাল কক্সবাজার রেললাইন পরিদর্শন করেছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সেটি তারা এখনো নির্ণয় করেনি। তবে এক-দেড় কিলোমিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানায় রেল কর্তৃপক্ষ। যেটি শিগগিরই রিকভার করা সম্ভব বলে জানায় তারা। ট্রেন চলা নিয়ে কোনো সংশয় নেই বলেও জানায় রেল কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার রেল প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এক থেকে দেড় কিলোমিটার রেললাইন সামান্য ক্ষতি হয়েছে। পানি নেমে গেলে সংস্কার করা হবে। রেললাইনের কারণে পানি ওঠার দাবিটি সঠিক নয়।