সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন

খুলনা বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে মির্জা ফখরুল
বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না। এ দেশে গণতন্ত্রকামী ৩৬টি রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া আর কোনো নির্বাচন হতে দেয়া যাবে না। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এ বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। স্বাধীনতার পর আজ ভয়াবহ সংকট বিরাজ করছে। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সরকার দিশাহারা হয়ে পড়েছে। আজ তারা হিরো আলমের ওপর হামলা করেছে। তাকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে তাদের চরিত্রের আরেকবার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। অচিরেই এই ভোটচোরদের হটাতে হবে, না পরলে দেশে অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।

দেশের স্বার্থে লুটেরাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানান।

গতকাল বিকালে ‘তরুণ প্রজন্মদের ভোট, ভোটের জন্য যুদ্ধ হোক’ স্লোগানকে সামনে রেখে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের উদ্যোগে নগরীর ডাকবাংলোস্থ সোনালী ব্যাংক চত্বরে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। বিশেষ বক্তা ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। এতে বক্তব্য দেন- বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, খুলনা মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক এডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, জেলা আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, যুবদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি তৈয়্যেবুল ইসলাম বনি, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আরিফ হাওলাদার, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তবিবুর রহমান সাগর।
নির্যাতিত পরিবারের পক্ষে বক্তব্য দেন আড়াই মাস গুম থেকে ফিরে আসা রূপসার সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কাশেম, বাগেরহাটের শহীদ নূর আলম তালু ভূঁইয়ার স্ত্রী কানিজ ফাতিমা, ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শহীদ নাজমুল হাসানের স্ত্রী সাবেরা নাজমুল মুন্নী, ঝিনাইদহের শহীদ সাজ্জাতুল জামানের শিশুকন্যা তোয়া, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে কব্জি হারানো যুবদল নেতা লিটনের স্ত্রী। সমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, এডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেহেদী আহমেদ রুমি, কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাহারুজ্জামান মোর্তজা, সাবেক শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করবেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

কোরআন তেলাওয়াত করেন সাবেক ছাত্রদল নেতা এম এম মুসা। প্যারডি কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মোহাম্মদ শোয়েব হোসেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ন্যাড়া বেল তলায় বারবার যায় না, একবারই যায়। শিয়ালের কাছে কেউ মুরগি বর্গা দেয় না। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া বলে তারা হিরো আলমকে পর্যন্ত সহ্য করতে পারছে না। আজ হিরো আলম ভোটকেন্দ্রে গেলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাকে মাটিতে ফেলে মারধর করেছে। তিনি বলেন, দেশে ডেঙ্গুতে মানুষ ৭৬ জন মারা গেছে। অথচ মানুষকে বিপদে ফেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশ সফর করছেন। আজ সারা দেশে হত্যা ও গুমের রাজত্ব চলছে। এর প্রতিবাদ করলে আমাদের নেতাকর্মীদের খুন করা হয়, গুম করা হয় ও হাত-পা কেটে নিয়ে পঙ্গু করা হয়। এ জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করিনি।