বহু চামড়া অবিক্রিত, যেগুলো বিক্রি হয়েছে তা নামমাত্র মূল্যে

দেশের চামড়ার চাহিদার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ যোগান পূরণ হয় কোরবানির পশুর চামড়া থেকে। তাই বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) পশু কোরবানির পর থেকেই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পাড়া–মহল্লা ঘুরে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করলেও এবছর তাদের দেখা মেলেনি ফলে বহু চামড়া অবিক্রিত রয়ে গেলে তা মাটিতে পুতে ফেলেন।

আর যেসব চামড়া সংগ্রহ করা হয় তা বিকেল থেকেই বিক্রি করেছেন আড়তে। নগরের ছোট-বড় ২২৫টি আড়তে চামড়া সংরক্ষণ হয়।

আড়তদার রয়েছেন ৩৭ জন। অধিকাংশ আড়ত নগরের আতুরার ডিপো এলাকায়। সেখানে ট্রাকেবোঝাই চামড়া আসছে। এছাড়া বিবিরহাটে সুন্নিয়া মাদরাসার মাঠে নগরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা কাঁচা চামড়া এনে রাখা হচ্ছে।
যে সব চামড়া বিক্রি হয় তা কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। চন্দনপুরা এলাকার বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, দুই লাখ টাকা গরুর চামড়া ৩০০ টাকার বেশি বিক্রি করা যাচ্ছে না। সিন্ডিকেট করে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছেন। ছাগলের চামড়া তো কেউ কিনছেন না। সেগুলো ফেলে দেওয়া হচ্ছে ডাস্টবিনে।

তবে আড়তদাররা বলছেন, লবণের দাম বেড়ে যাওয়ায় কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়ায় খরচও বেড়েছে। পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তা অপরিশোধিত লবণ বিক্রি হচ্ছে ১১৫০-১২৫০ টাকায়। একটি গরু বা মহিষের চামড়া সংরক্ষণ করতে ৮-১০ কেজি লবণ প্রয়োজন হচ্ছে। তাই লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়ার দাম স্বাভাবিকভাবে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম। এবছর বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে কোরবানির ঈদে অন্তত সাড়ে ৩ লাখ চামড়া সংগ্রহ করতে পারবেন বলে আশা করছেন চট্টগ্রামের আড়তদাররা।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন বলেন, মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে এসব চামড়া সংগ্রহ করা হচ্ছে। ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় চামড়া কেনা হয়েছে। অনেকে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করে রেখেছেন, কিন্তু আড়তে পাঠাননি। বিভিন্ন উপজেলা থেকে এখনও চামড়া আসছে। মাসখানেক পরে ট্যানারি থেকে প্রতিনিধিরা এসে সংরক্ষণ করা চামড়া দেখার পর বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু হবে।

গতবছরের মতো এবারও কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করছে গাউসিয়া কমিটি। গাউসিয়া কমিটি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, গত বছর আমরা প্রায় এক লাখ চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন। এ বছর দেড় লাখ চামড়া সংগ্রহের টার্গেট রয়েছে। সংগঠনের ৭০০ ইউনিটের মাধ্যমে ৬ হাজার কর্মী ৮০টি গাড়ি নিয়ে চামড়া সংগ্রহ করে এনে মাদ্রাসা মাঠে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করছেন।