চসিকের মৌলিক সেবাসমূহ শতভাগ পাওয়ার প্রত্যাশা করে নগরবাসি

চসিক ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মীদের শতভাগ কাজ আদায়ের আহবান চসিক ৪৭তম সাধারণ সভায় মেয়র
নগর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন,আলোকায়ন এবং নগর অবকাঠামোগত উন্নয়ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মৌলিক কাজ। শিক্ষা,স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য সেবা চসিকের মৌলিক কাজের বাইরে। চসিকের মৌলিক সেবাসমূহ শতভাগ পাওয়ার প্রত্যাশা করে নগরবাসি।এতে ব্যত্যয় ঘটলে দুর্নামের ভাগিদার হয় – প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিশনার। তাই চসিক প্রদেয় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার গুরু দায়িত্ব সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের। এমতাব্স্থায় চসিকের ওয়ার্ড পর্যায়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সহ সংস্থার অন্যান্য কার্যাবলী তে নিয়োজিত কর্মী দের নিকট থেকে শতভাগ আদায় করে নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচিত পরিষদের ৪৭ তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। মঞ্চে চসিক প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, চসিক প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামশুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লেঃকর্ণেল মহিউদ্দিন আহমদ,প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ওয়ার্ড কাউন্সিলর,সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ নগরীর সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তা সহ চসিক বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সঞ্চলনায় ছিলেন চসিক সচিব আবু সাহেদ চৌধুরী। সিটি মেয়র আরো বলেন বিগত সময়ে পরিচ্ছন্ন বিভাগে নগরীর নালা-নর্দমা পরিস্কারক ছিল ১৭ শত ৫০ জন। এই স্বল্প সংখ্যক পরিচ্ছন্নকর্মী দিয়ে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা অসম্ভব। তাই মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ডোর – টু -ডোর প্রকল্পের ২ হাজার নতুন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়।এর ফলে পরিচ্ছন্ন বিভাগের সক্ষমতা বেড়েছে অনেকগুণ। তারপরেও ওয়ার্ড কার্যালয় থেকে নিত্যদিন আসে লোকবলের চাহিদাপত্র। নতুন লোক নিয়োগ আর সম্ভব নয় এবং এই সক্ষমতা এখন সিটি কর্পোরেশনের নেই। কারণ কর্পোরেশনের যাবতীয় ব্যয় নিজস্ব আয়ের উপর নিভরশীল। এই প্রসঙ্গে মেয়র বলেন ওয়ার্ড পর্যায়ের সকল কর্মকান্ডের ভাগিদার সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ড কাউন্সিলর। এর সফলতা – ব্যর্থতা দুটোই আপনাদের উপর। ভাল কাজ করলে সুনামের ভাগিদার আপনারা,মন্দ কাজ করলে দুর্নামের ভাগিদারও আপনারা। এতে কর্পোরেশনের কিছু আসে আর যায় না। আমিও চাই না আপনারা দুর্নামের ভাগিদার হোন। তাই জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেবার মনমানসিকতা নিয়ে আপনাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে আমি নগরীর ওয়ার্ড উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিগত সময়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়েছি,আগামীতে এই সহযোগিতা অব্যহত থাকবে বলে তিনি সংশ্লিষ্ঠদের জানিয়ে দেন। নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষে ওয়ার্ড ভিত্তিক বৈঠকে কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন ওয়ার্ডে সমস্যা আজকের নয়। সমস্যা দীর্ঘদিনের । এগুলো সমাধানের জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরদেরকে এগিয়ে আসবে হবে। তাই চসিকের করণীয়াদি নির্ধারণ করার নিমিত্তে ওয়ার্ডে যাবতীয় সমস্যা চিহ্নিত করে কাউন্সিলরদেরকে আগামী রোববারে মধ্যে বিশেষ করে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন,শিক্ষা, স্ব্স্থ্যা,অবকাঠামো উন্নয়ন সার্বিক চিত্র প্রদানের আহবান জানান মেয়র। তিনি বলেন নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে ৯ সদস্য বিশিষ্ঠ ওয়ার্ড হেলথ কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটিতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর,জোনাল মেডিকেল অফিসার,এনজিও প্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি, ধর্মীয় প্রতিনিধি,সমাজের গন্যমান মহিলা ও পুরুষ এবং সংশ্লিষ্ঠ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার থাকবে। নগর স্বাস্থ্যসেবাকে আরো গতিশীল করা এই ওয়ার্ড হেলর্থ কমিটির মুল লক্ষ্য। এছাড়া সুষম খাদ্য গ্রহন এবং রোগ প্রতিকারে জন্য প্রচারণা চালানো এবং সুস্বাস্থ্য জীবন যাপনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর সুষম খাদ্য গ্রহন সম্পর্কে স্বাস্থ্য বার্তা নগরবাসির মধ্যে পৌঁছে দেয়াই এই ওয়ার্ড হেলর্থ কমিটির কাজ ।
সভায় চসিক স্কুল-কলেজ সমূহে ফলজ বৃক্ষের চারা বিতরণ,আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে চলমান সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রম পরিচালনা,নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্যদের অভিজ্ঞতা বিনিময় সংক্রান্ত ভ্রমন,নগরীর বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,মসজিদ,মাদ্রাসা ও মন্দিরের সামনে হর্ণ না বাজানো ও গাড়ীর গতি সীমিত করুন,লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ড স্থাপন,চসিক এলাকায় যেসব ঝুঁকিপূর্ণ বিল্ডিং আছে সেগুলোর তালিকা তৈরী, সংকীর্ণ অলিগলিতে রাস্তা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্যাচওয়ার্ক টীম গঠন,নগর পরিসেবার মান বৃদ্ধি করতে অবশিষ্ঠ ওয়ার্ড সমূহে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এছাড়া সভায় অর্থ ও সংস্থাপন, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য রক্ষা, জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংরক্ষণ,আইন শৃংখলা,পরিচালনা ও রক্ষণা বেক্ষণ, যোগাযোগ, দারিদ্র হ্রাস করন ও বস্তি উন্নয়ন,নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন,পরিবেশ উন্নয়ন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, বাজারমূল্য পর্যবেক্ষন মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষন, পানি ও বিদ্যুৎ, ষ্ট্যান্ডিং ও নামকরণ উপ- কমিটির চেয়ারম্যানগণ স্ব স্ব কমিটির কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন এবং আলোচনান্তে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভার শুরুতে সম্প্রতি নগরীতে নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনা বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন চসিক মাদ্রাসা পরিদর্শক মাওলানা হারুন-উর-রশিদ চৌধুরী।