গ্রিসে বড় জয় পেয়েছে রক্ষণশীলরা

গ্রিসের নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীলরা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিসের দল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টি (এনডিপি) মোট ভোটের ৪০.৮ শতাংশ পেয়ে জয়ী হয়েছে। তবে এই ভোট একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যথেষ্ট নয়। যদিও এই জয়কে ‘রাজনৈতিক ভূমিকম্প’ বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী মিটসোটাকিস। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
খবরে বলা হয়, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের লক্ষ্যে আরও একটি নির্বাচন আয়োজনের ইঙ্গিত দিয়েছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী। তার দল এনডিপির অর্ধেক ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাম-পন্থী সিরিজা পার্টি। তারা পেয়েছে ২০.১ শতাংশ ভোট। ৫৫ বছর বয়সী মিটসোটাকিস হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করেছেন এবং অর্থনীতি নিয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে একজন বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের মানুষ। গ্রীসকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ধার করতে তার ওপরে ভরসা রেখেছে দেশটির বাসিন্দারা।

রোববার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গ্রিসে। এনডিপির বড় জয়ের পর মিটসোটাকিসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সিরিজা পার্টির প্রধান অ্যালেক্সিস সিপ্রাস।

প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, কিরিয়াকোস মিটসোটাকিসের নিউ ডেমোক্রেসি পার্টি ৩০০ আসনের মধ্যে ১৪৬টি আসনে জয় পেয়েছে। তবে পার্লামেন্টে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ১৫১টি আসন। সে ক্ষেত্রে এখনো পাঁচটি আসন থেকে দূরে রয়েছে নিউ ডেমোক্রেসি পার্টি। এমন পরিস্থিতিতে সরকার গঠনের জন্য নিউ ডেমোক্রেসি পার্টিকে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট গঠন করতে হবে।
কিন্তু মিটসোটাকিস জোট করবেন না বলে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। কারণ গ্রিসের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদর্শের দিক থেকে ব্যাপক দূরত্ব রয়েছে। ফলে আগামী জুন অথবা জুলাই মাসের প্রথম দিকে দ্বিতীয় দফা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বাসিন্দারা একটি শক্তিশালী সরকার চায়। আজকের এই রাজনৈতিক ভূমিকম্প প্রমাণ করে যে, জনগণ এই সরকারের সমাধানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দেখতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিস গ্রিসের ক্ষমতাধর রাজপরিবারের সদস্য। তার পিতা কনস্টান্টিনোস মিটসোটাকিস ১৯৯০ সালের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বোন ডোরা বাকোয়ানিস ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার ছেলে কোস্টাস বাকোয়ানিস এথেন্সের বর্তমান মেয়র। অন্যদিকে রামপন্থী দল সিরিজা পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস। তিনি ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।

গ্রিসে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় ৫৭ জন নিহত হন। এবারের নির্বাচনের প্রচারণায় বড় প্রভাব ফেলেছে ওই দুর্ঘটনা। বিরোধী শিবির ওই দুর্ঘটনাকে সরকারের ব্যর্থতা বলে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।