শাকিবের ‘লিডার’ কী আসলেই সুপারহিট

শাকিব খানের সিনেমা ‘লিডার, আমিই বাংলাদেশ’সহ ৮টি সিনেমা গত ঈদে মুক্তি পায়। এরমধ্যে ঈদের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ৪-৫টি ছবির অবস্থা ছিল সন্তোষজনক। তপু খান পরিচালিত ‘লিডার, আমিই বাংলাদেশ’ মুক্তি পায় ১০০টি হলে। এরমধ্যে সিনেপ্লেক্সের ৪টি শাখা ও ব্লকবাস্টারে ছবিটি প্রথম সপ্তাহে ভালো চললেও দ্বিতীয় সপ্তাহে দর্শক কমতে থাকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিনেপ্লেক্সে এখন পর্যন্ত ভালো চলেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ও সজল-পূজা অভিনীত ‘জ্বীন’ ছবিটি।

অনন্ত-বর্ষার ‘কিল হিম’র অবস্থানও ভালো সিনেপ্লেক্সে। ভালো চলেছে সাইফ চন্দন অভিনীত ‘লোকাল’ ছবিটিও। এদিকে গত শুক্রবার থেকে অন্য অনেক ছবির হল বাড়লেও ‘লিডার, আমিই বাংলাদেশ’ ছবির হল সংখ্যা নেমে আসে ২৫-এ। অগ্রিম টাকা দিয়ে যেসব সিনেমা হল ছবিটি নিতে রাজি নয়, তাদের ছবিটির প্রযোজক ছবিটি দিতে চাচ্ছেন না বলে জানান পরিচালক তপু খান। অর্থাৎ, ঈদের সপ্তাহে ভালো চললেও গত শুক্রবার থেকে হল মালিকরা অগ্রিম টাকা দিয়ে নিতে চাইছেন না ‘লিডার’। কারণ এটাকে তারা রিস্ক মনে করছেন।

যদিও ঈদের ছবির মধ্যে অনন্ত জলিলের ‘কিল হিম’ ছবির শো আগের তুলনায় বেড়েছে। বেড়েছে ‘লোকাল’ ও ‘প্রেম প্রীতির বন্ধন’ ছবির হলও। ‘জ্বীন’ ছবিটি এখনো সিনেপ্লেক্সে ভালো চলছে। কিন্তু কমেছে ‘লিডার’ এর হল।
যদিও হঠাৎ করেই পরিচালক, শাকিব খানসহ এ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা নিজেরাই দাবি করছেন ‘লিডার, আমিই বাংলাদেশ’ নাকি সুপারহিট! আসলেই কি তাই? ঈদ সপ্তাহের পরই যে ছবির হল ১০০ থেকে ২৫-এ নেমে আসে সেটিকে কি সুপারহিট বলা চলে! যদি সুপারহিট হয়েও থাকে তবে কি হিসেবে হলো? বাংলাদেশে এখনো বক্স অফিস রিপোর্ট এর ধারার সূচনা হয়নি।

যদিও খুব দ্রুতই সেটি হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি না হতেই কীভাবে একটি ছবিকে ‘সুপারহিট’ তকমা দেয়া যায়? শাকিব খান তার পেজে দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ‘লিডার’ সুপারহিট হওয়ার জন্য। কিন্তু দর্শকদেরই অনেকের প্রশ্ন, সুপারহিট তকমা কীভাবে পেলো এ ছবি? সুপারহিট হওয়ার যোগ্যতাই বা কি? উদাহরণস্বরূপ গত বছর ঈদে ‘পরাণ’ ছবিটি দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পায়। ছবিটি ঈদের পরও টানা কয়েক মাস চলেছে দেশের বিভিন্ন হলে।

এ ছবিটি করোনা পরিস্থিতির পর মোড় ঘুরিয়ে দেয় সিনেমার। তার পর পরই ‘হাওয়া’ সিনেমাটিও বেশ কয়েক মাস চলেছে হলে। কিন্তু এ দুটি ছবির কোনোটিকেই ‘সুপারহিট’ তকমা দেয়া হয়নি। প্রযোজক কিংবা কলাকুশলীদের পক্ষ থেকেও এমন কোনো প্রচারণা চালানো হয়নি। কারণ একটি সিনেমা সুপারহিট হওয়ার মতো হল সংখ্যা নেই আমাদের দেশে। আর যে বন্ধ হলগুলো ঈদের ছবি উপলক্ষে খোলা হয় সেগুলোর বেশির ভাগ ঈদ সপ্তাহ পর্যন্তই চলে। এরপর আবার বন্ধ হয়ে যায়।

অন্যদিকে সিঙ্গেল স্ক্রিনগুলোতে টিকিটের দাম বেশ কম। সেখান থেকে প্রযোজকদের লাভের অংশও কম। বড় হল কিংবা মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে দীর্ঘ সময় ছবি না চললে লাভের টাকা তুলে আনাই কষ্টকর। যেখানে পরিস্থিতি এমন, সেখানে একটি ছবিকে হঠাৎ ‘সুপারহিট’ তকমা দেয়া দর্শকদের বোকা বানানো ছাড়া আর কিছু নয় বলেই মনে করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।

অনেক দর্শকও ‘লিডার’ এর ‘সুপারহিট’ তকমা নিয়ে নিজেদের প্রশ্ন ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন নেটদুনিয়ায়। এদিকে ‘লিডার’ গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলেছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হলে। এ হলেই সব থেকে ভালো চলেছে ছবিটি। সেই ছবি নামিয়ে এখন ‘জ্বীন’ চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে মধুমিতা সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখারউদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘লিডার’ ভালো চলেছে। এরমধ্যে কয়েকটি ছুটির দিনও ছিল, সে কারণে দর্শক সমাগমও হয়েছে বেশি। এটাকে কি সুপারহিট সিনেমা বলা চলে? উত্তরে তিনি বলেন, সুপারহিট ছবি না এটা। আমাদের হলে যা চলেছে তাতে হিট বলা যেতে পারে। বাকি অন্য হলের হিসাব তো আর আমার জানা নেই।